৫০ ওভারও খেলতে পারল না বাংলাদেশ

টাইমস স্পোর্টস
4 Min Read
দলীয় সর্বোচ্চ ৫১ রানের ইনিংস খেলেছেন তাওহিদ হৃদয়। ছবি: শ্রীলংকা ক্রিকেট

দলীয় সংগ্রহ ২০০ পেরিয়েছিল ইনিংসের ৩৮-তম ওভার শেষে। উইকেটে ছিলেন ৪৫ রানের জুটি গড়া তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাদের সামনে সুযোগ ছিল সংগ্রহকে ৩০০ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। ৪১ বলের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হলো ২৪৮ রানে। খেলতে পারল না পুরো ৫০ ওভারও। অবশ্য ৪৫.৫ ওভার পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়া আর ২৫০ ছোঁয়া স্কোরের জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে তানজিম হাসান সাকিবকে।

ইনিংসের ৪১তম ওভারে সাকিবের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতেই রান আউটে কাটা পড়েন দলের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। আসিথা ফার্নান্দোর বল মিড উইকেটে ঠেলে দুই রানের জন্য ছুটতে শুরু করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তবে স্ট্রাইকিং এন্ড থেকে সাকিব ঠিকঠাক সাড়া দেননি, ততক্ষণে অবশ্য উইকেটের অর্ধেকে পৌঁছে যান হৃদয়। আর সেখানেই বাধে বিপত্তি, নন স্ট্রাইকিং এন্ডে ফিরতে ফিরতেই মাদুশকার থ্রো থেকে স্টাম্প ভেঙে দেন আসিথা। অষ্টম ফিফটি ছোঁয়া হ্রদয় মাঠও ছেড়েছেন তাই সাকিবের ওপর ক্ষোভজ ঝেড়ে। কারণ ডেঞ্জার এন্ডে টেইলএন্ডার সাকিবেরই দৌড়ানোর কথা।

সাকিব অবশ্য হৃদয়কে ফিরিয়ে দেয়ার প্রায়শ্চিত্ত করেছেন দুই ছক্কা ও দুই চারে ২১ বলে ৩৩* রানের ইনিংসে। ছক্কা দুটো মেরেছেন লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। অবশ্য ইনিংসে নিজের শেষ ওভার করতে এসে দুই ছক্কা হজম করলেও তৃতীয় শিকারা হিসেবে পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমানের উইকেট। এর আগে নিয়েছেন তানভীর ইসলাম ও ৬৭ রানের ইনিংস খেলা পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট। দারুণ খেলতে থাকা এই বাঁহাতি ওপেনার হাসারাঙ্গার গুগলিটা একেবারেই বুঝতে পারেননি।

ফ্লাইটেড, খানিকটা স্লোয়ার ধরনের ডেলিভারি দেখে ফ্রন্টফুটে খেলতে আসেন পারভেজ। কিন্তু গুগলির কারসাজিতে বলের লাইন মিস করে বসেন ৪৬ বলে প্রথম ফিফটি ছোঁয়া এই বাঁহাতি, অফস্টাম্প উপড়ে দেন হাসারাঙ্গা। বোল্ড হওয়ার আগে অবশ্য লংকান স্পিনারদের দারুণ সামলেছেন পারভেজ। বিশেষ করে ইনিংসের শুরুতে আসালাঙ্কার ফ্লাইটেড ডেলিভারিগুলোকে টার্নের সুযোগ না দিয়ে সুইপ শটে রান বের করেছেন। আসিথা-চামিরাদের বাউন্সারে পুল শটেও বের করেছেন বাউন্ডারি। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৯ বলে ৬৭ রান করে পারভেজের আগে অবশ্য নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন আসালাঙ্কার বলে। শর্ট ডেলিভারিতে চাইলে মাঠের যেকোনো প্রান্তেই তুলে মারতে পারতেন, কিন্ত শান্তর শট ওয়াইডিশ লং অনে খুঁজে পায় থিকশানার হাতে। ব্যক্তিগত ১৪ রানে শান্তর বিদায়ে ভাঙে পারভেজের সাথে ৬৩ রানের জুটি।

পাঁচে নেমে অধিনায়ক মিরাজও সুবিধা করতে পারেননি। চামিরার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন নিসাঙ্কার হাতে। প্রায় দুই  বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা শামীম হোসেন শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। উইকেটে সেটও হয়েছেন ভালোভাবেই। কিন্তু লঙ্কান পেসার আসিথার পাতা বাউন্সারের ফাঁদে পা দিয়ে ২২ রানের থামে শামীমের ওয়ানডে প্রত্যাবর্তনের ইনিংস। স্কয়ার লেগ, ডিপ মিড উইকেট শামীমের স্কোরিং জোন জেনেই বারবার সেদিকে শট খেলতে তাকে বাধ্য করছিলেন দুই লংকান পেসার। লেগ স্টাম্পে পিচ করা তেমনই এক শর্ট লেংথের বলে জায়গা বানিয়ে পুল করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে লিয়ানাগের হাতে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ২ ছক্কা ও ১ চারে ২৩ বলে করেন ২২ রান।

প্রেমাদাসার যে উইকেটে দ্বিতীয় ওয়ানডে চলছে, সেটার আচার আচরণ প্রথম ওয়ানডের মতোই। উইকেটে যে বোলিং জুজু ছিল তেমনটাও না। তবে শুরুর দিকের সুইং-মুভমেন্ট বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে শ্রীলংকা। স্লোয়ার বলের পসরা সাজিয়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তানজিদ তামিমের উইকেট নেন আসিথা। গুড লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে এই ডানহাতি পেসারের নাকল বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেট কিপার কুশাল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচের ফিফটি করা তানজিদ। মিডল অর্ডারে জাকের আলী অনিককে এলবিডব্লিউ করার পর হাসান মাহমুদের উইকেটই নেন আসিথা। ৯ ওভারে ৩৫ রানে ৪ উইকেট এই ডানহাতি পেসার।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *