আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল বিয়ের দিনক্ষণ। সেই আনন্দ আয়োজনে বাধ সাধল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন হবু বর অভিজিৎ সাহা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিয়ের শুভ মুহূর্ত বা লগ্ন অতি গুরুত্বপূর্ণ, তা পেরিয়ে গেলে হতে হয় লগ্নভ্রষ্ট। তাই নির্ধারিত লগ্নে হাসপাতালের বিছানাতেই পুরোহিতের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো ব্যতিক্রমী এক বিয়ের অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয় এই বিয়ের অনুষ্ঠান।
নবদম্পতির স্বজনরা জানান, বরের শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও লগ্নভ্রষ্ট হওয়া এড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিশেষ কক্ষে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
হাসপাতালে পুরোহিতের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ের অনুষ্ঠান। ছবি: টাইমস
অল্প কয়েকজনের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। অতিথিরা জানান, মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেনের বাসিন্দা অরবিন্দ সাহার বড় ছেলে অভিজিৎ সাহার বিয়ের তারিখ আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকা থেকে ফেরার পথে ধামরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন বর। তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পরে সেখানেই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ায় আবহ ছিল অন্যরকম। হাসপাতালের বিছানায় বসেই বর-কনে পরস্পরের জীবনসঙ্গী হন। সনাতনী বিয়ের অন্যতম আচার সাত পাকও সম্পন্ন হয় ভিন্নভাবে। অভিজিৎ সাহা সাত পাক সম্পন্ন করেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই।
বরের বাবা অরবিন্দ সাহা জানান, তারা ভাবতেই পারেননি হাসপাতালে এমন সুন্দর ও আনন্দঘন একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
কনে অমৃতা সরকার ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী গ্রামের বাসিন্দা। স্বামীর সুস্থতা ও দাম্পত্য জীবনের জন্য সবার কাছে আশীর্বাদ চেয়েছেন তিনি।
হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট প্রধান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার শিকার আনন্দ সাহার হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত ছিল। তবুও পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হলে আমরা চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করি। রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় কেবিনের বাইরে হাসপাতালের অব্যবহৃত জায়গায় বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়।’
‘রোগীর সেবার পাশাপাশি যেকোনো মানবিক বিষয়ে আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব সময়ই আন্তরিক’- বলেই মন্তব্য করেন তিনি।