আলোচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নামে রাজধানীর উত্তরায় থাকা একটি ফ্ল্যাট ও ১৮ কাঠার তিনটি প্লট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
হারুন অর রশীদ ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে বিরোধী আন্দোলন দমনসহ বিভিন্ন ঘটনায় তিনি ছিলেন ব্যাপক তৎপর। পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালনকালেও তিনি গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জে জন্ম দিয়েছেন অনেক বিতর্কের। গতবছর তার বিভিন্ন পদক্ষেপ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেললে তাকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। সে অবস্থায় গতবছর ৫ আগস্ট সরকারের পতন ঘটে।
সরকার পরিবর্তনের পর হারুন আত্মগোপনে চলে যান। পরে তিনি আর চাকুরিতে যোগ দেননি। ইতোমধ্যে হারুনের বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন ঘটনায় মামলা হয়েছে। তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আদালতে করা দুদকের করা আবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে শত-শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধান চলাকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি এসব সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এ জন্য সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়া প্রয়োজন।
আদালত দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের করা আবেদন মঞ্জুর করে হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রোকের আদেশ দেন।
দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, হারুনের নামে থাকা পৃথক তিনটি প্লট রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত। এছাড়াও জব্দের আদেশ দেয়া ১৫৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটি উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন অর রশিদের ১০০ বিঘা জমি, পাঁচটি ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাবে থাকা ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়।
হারুনের পাশাপাশি তার ভাই এবিএম শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি জব্দ, ১১টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।