স্পিন ট্র্যাকে কি কাটবে বাংলাদেশের ৯ বছরের জয়খরা?

টাইমস স্পোর্টস
3 Min Read
টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফির পাশে দুই দলের অধিনায়ক লিটন দাস ও সালমান আলী আগা। ছবি: বিসিবি

রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। রবিবার এক দিন আগে ফ্লাডলাইটের নিচে বাংলাদেশের প্রথম দলীয় অনুশীলন। সেন্টার উইকেটের পাশে আলাদা দুটো নেটে ব্যাটিংয়ে নামলেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আর তানজিদ হাসান তামিম। নতুন বলে তাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। শুরুতে দুই পেসারের সুইং-মুভমেন্টের সাথে মানিয়ে নিয়ে নাসুম আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজদের স্পিনের সামনে অ্যাটাকিং ব্যাটিং।

স্পিনকে আলাদা করে অ্যাটাক করার পেছনে কারণও আছে তাদের। জানা গেছে, চিরাচরিত স্পিন সহায়ক উইকেট দেখা যাবে এই সিরিজেও। পাকিস্তানও সফরে এসেছে চার স্পেশালিস্ট স্পিনারকে নিয়ে। সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগাও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সফরে আসার আগে করাচিতে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে মিরপুরের লো বাউন্সের আদলে উইকেট বানিয়ে তারা অনুশীলন করেছেন। 

শ্রীলংকা সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ইমন রান না পেলেও তানজিদ শেষটা করেছেন দুর্দান্ত। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানের ইনিংসের ৬৮-ই তুলেছেন স্পিনারদের বলে। সবকয়টি বাউন্ডারিও পেয়েছেন স্পিনারদের পিটিয়েই। পাকিস্তানের স্পিনারদের সামলাতে  নেটে প্রস্তুতিটাও তাই সেরেছেন সেভাবেই। 

অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ দেখায় কোনো সুখস্মৃতি নেই বাংলাদেশের। লাহোরে ৩-০ ব্যবধানে হারা সেই সিরিজে তানজিদ অবশ্য প্রতি ম্যাচেই পেরিয়েছেন ৩০ রানের কোটা। ব্যক্তিগত সাফল্য সরিয়ে রাখলে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দলীয় সাফল্য নেই আজ ৯ বছর। সর্বশেষ ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২২ ম্যাচ শেষে হেড টু হেডেও ১৯ জয়ে এগিয়ে পাকিস্তান। তাই  মিরপুরের সম্ভাব্য স্পিন ট্র্যাকে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ জয় খরা কাটানোরও।

অধিনায়ক লিটন দাস অবশ্য পরিসংখ্যান-রেকর্ড নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন। ভালো ক্রিকেট খেলে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখতে চান তারা, ‘আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে হবে। সব কিছু তৈরি হয় ইতিহাস হওয়ার জন্য। আর রেকর্ড কিন্তু ভাঙাও হয়। আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি, রেকর্ড ভাঙতে সময় লাগবে না। ওই রেকর্ডের চিন্তা না করে, আমরা কী করতে পারি, আমাদের কতখানি সামর্থ্য আছে, কতটা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, সেসব ভাবলে ওই সব জিনিসই বদলে যাবে।’

পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশের অবশ্য হোম কন্ডিশনের সুবিধা আছে। এর সাথে সদ্য জেতা শ্রীলংকা সিরিজের আত্মবিশ্বাস বাড়তি অনুপ্রেরণা। অধিনায়ক লিটন দাসও বলেছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের মানসিকতা নিয়েই খেলতে নামবেন তারা। 

তবে ঘরের মাঠের চেনা কন্ডিশনের সুবিধা আছে বলেই, বাংলাদেশ জিতে যাবে এমনটা মানতে নারাজ। সরাসরিই বলেছেন, ভালো ক্রিকেট খেলাটাই তাদের আসল লক্ষ্য, ‘যে কোনো দলকে হারানোর মতো মানসিকতা আমাদের আছে। আমরা সেই চেষ্টাই করব। তবে আপনাকে নির্দিষ্ট দিনে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তার মানে এই না যে, হোম কন্ডিশন বলে আমরাই ভালো ক্রিকেট খেলব। আগেও বলেছি, পাকিস্তান ভালো দল। তাদের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই বিপিএল খেলে থাকে। তারাও সেই কন্ডিশনটা সম্পর্কে জানে। আমরা চেষ্টা করব, ভালো ক্রিকেটটা খেলার’।

বাংলাদেশের বিপক্ষে অতীত কিংবা সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে পাকিস্তান অবশ্যই এগিয়ে। এর সাথে স্কোয়াডের ১৫ ক্রিকেটারের মধ্যে ৯ জনের বিপিএল অভিজ্ঞতাও তাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। গেল কয়েক মৌসুম ধরে বিপিএল খেলা হারিস রউফ, খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফদের সাথে বাংলাদেশের কন্ডিশন-উইকেট নিয়ে আলাদা করে কথাও বলেছেন অধিনায়ক সালমান। 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *