সীমান্তে প্রকাশ্যে গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করা হচ্ছে: বিজিবি ডিজি

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ছবি: টাইমস
Highlights
  • যৌথ ঘোষণায় আরও জানানো হয়, সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থানের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্সের’ বিষয়ে উভয় পক্ষই একমত হয়েছে।

সীমান্তে প্রকাশ্যে গুলি করে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

চারদিনব্যাপী ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার ঢাকার পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এতে সীমান্ত হত্যার বিষয়ে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক (ডিজি) দালজিৎ সিং চৌধুরী দাবি করে বলেন, ‘ভারতীয় সীমানায় অপরাধ দমনে একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হয় বিএসএফ। তারা অন্যকে হত্যা নয়, বরং নিজেদের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে গুলি করে।’

তবে এ বিষয়ে দালজিৎ সিং চৌধুরীর সঙ্গে তীব্র দ্বিমত পোষণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক সময় দিনের আলোতেই প্রকাশ্যে গুলি করে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তাদের বেশিরভাগই সীমান্তবর্তী গ্রামের সাধারণ বাসিন্দা। নিরস্ত্র মানুষ কখনো সশস্ত্র বিএসএফ-এর জন্য জীবনের হুমকি হতে পারে না।’

 

৫৬তম সীমান্ত সম্মেলন শেষে পিলখানায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি-বিএসফ প্রতিনিধিরা। ছবি: টাইমস

সম্মেলনে একে অপরের সীমান্তে ‘অনুপ্রবেশ’ (বর্ডার ক্রসিং) না করার পাশাপাশি সব সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজিবি-বিএসএফ।

সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার না করার বিষয়ে বিএসএফকে আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

তিনি আরও জানান, ‘অপরাধ না করে কেউ ভুলবশত’ সীমান্ত অতিক্রম করলে, তাদের আইন মেনে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে।

‘সীমান্তের মানুষ ভয়ে থাকে। তারা চায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করুক। আমরা এসব ব্যাপার আরও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছি’, বলেন মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

দুপক্ষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়াতে বিএসএফ বিভিন্ন কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বিএসএফের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বিজিবি।

যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সীমান্তে পুশইন প্রসঙ্গে বিএসএফ ডিজির কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ‘১৫ বছরে সীমান্তে পুশইনের ঘটনা না ঘটলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে দুই হাজারের বেশি পুশইনের কারণ কী?’

জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক সাফ জানিয়ে দেন, এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই। ‘কোনো পুশইন হচ্ছে না’ দাবি করে দালজিৎ সিং চৌধুরী বলেন, ‘ভারতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিরা  ফিরে যাচ্ছেন।

যৌথ ঘোষণায় আরও জানানো হয়, সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থানের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্সের’ বিষয়ে উভয় পক্ষই একমত হয়েছে। সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে দেড়শ গজের মধ্যে পূর্ব অনুমোদন ছাড়া কোনো উন্নয়নমূলক কাজ না করা এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত শেষ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সেই সঙ্গে সীমান্তে হত্যা ও পুশইন বন্ধ করা, আকাশসীমা লঙ্ঘন না করা, মাদক, অস্ত্র বাণিজ্য এবং মানব পাচার প্রতিরোধ, যৌথ নদী কমিশন অনুমোদিত নদীর তীর সংরক্ষণকে সম্মেলনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বিএসএফ পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *