তিন দফা দাবি আদায়ে দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাতে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন ‘প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের’ সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হক লিপু।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
‘আমাদের তিন দফা দাবির কোনোটাই এখনো পূরণ হয়নি। যেসব নীতিনির্ধারক দায়িত্বে রয়েছেন, তারা অনেকেই আমাদের আন্দোলনের বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন না,’ উল্লেখ করেন তিনি।
সাকিবুল আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটিতে এখন থেকে চার উপদেষ্টা ও ইঞ্জিনিয়ারদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনোনীত সদস্যও যুক্ত থাকবেন।
এর আগে শত শত বুয়েট শিক্ষার্থী বুধবার সকালে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে দুপুরে ‘যমুনা’ অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধায় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইট-পাটকেল বিনিময়ের ঘটনা হয়। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় লাঠিপেটা করার পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও জল কামান ব্যবহার করে। এতে অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হন বলে জানা যায়।
এরপরেও রাতেও শাহবাগে অবস্থান করার কথা ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন সন্ধ্যায় রেলভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘যমুনা অভিমুখে যাত্রা অনভিপ্রেত ছিল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি এসে ক্ষমা চাইবে।’
তিনি জানান, বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের পেশাগত স্বীকৃতির দাবির যৌক্তিকতা পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আবার বৈঠক হবে।
এদিকে, রাতে শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা আমার সন্তানসম। তোমাদের কষ্ট আমাকেও কষ্ট দেয়। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যা ঘটেছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
তিনি জানান, ওই ঘটনার পূর্ণ তদন্তে বৃহস্পতিবার একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।