সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্য লগ্ন শুভ মহালয়া রোববার। এদিন থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে। ভোরের আলো ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পিতৃপক্ষ শেষে শুরু হচ্ছে দেবীপক্ষ। চণ্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে মর্ত্যে দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানানো হবে।
মহালয়া উপলক্ষে চণ্ডীপাঠ ছাড়াও বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মূলত মহালয়া মানেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হওয়া।
২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত রোববার থেকেই শোনা যাবে দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি। দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হবে। মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে স্থাপন করা হবে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই চণ্ডীপাঠ, চণ্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়া ঘটে।
মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুরাণে আছে, দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব–মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী নিয়ে দেবী দুর্গা নয় দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।
মহালয়ার দিন ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা।
সনাতন ধর্মে বলা হয়, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে জল-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়।