টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা তখনও এত ব্যাটার কেন্দ্রিক হয়নি। দুশো-আড়াইশো রান হরহামেশা হতো না, সেটা চেজ করার দুঃসাহসও দলগুলো দেখাত না। তবে নেদারল্যান্ডস দল ঠিকই একটা অঘটন ঘটিয়ে দিয়েছিল। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯০ রান চেজ করে ফেলেছি মাত্র ১৩.৫ ওভারে। অথচ পরের রাউন্ডে যেতে এই রান তাদের করতে হতো ১৪.২ ওভারে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩ বল হাতে রেখে অবিশ্বাস্য সেই রান তাড়ার পর নিশ্চিত করেছিল সুপার টেন।
আইরিশদের হৃদয় ভাঙার ১১ বছর পর আবারও সিলেটের মাঠে ডাচ দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। যদিও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচের একাদশের কেউই নেই ডাচদের বর্তমান দলে। তবুও বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে স্মৃতিচারণ করতে হলো টি-টোয়েন্টির রূপকথায় জায়গা করে নেয়া সেই ম্যাচের।
ঐতিহাসিক সেই ম্যাচ কতটা অনুপ্রেরণা দেবে? স্মিত হেসে এই প্রশ্নের জবাবে স্কট বললেন, ‘১১ বছর আগের কথা। সেই ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা নেয়ার খুব বেশি কিছু নেই। তবে সিলেটের এই মাঠে স্পেশাল একটা জায়গা নিয়ে আছে।’
ম্যাচ থেকে খুব বেশি কিছু নেয়ার না থাকলেও সিলেটের মাঠের ইতিহাসের গান ঠিকই গাইলেন এই ডানহাতি ব্যাটার, ‘২০১৪ সালের ম্যাচটা আমি খেলিনি। তবে দলের কয়েকজন ছিল সেই ম্যাচে। ডাচ ক্রিকেট ইতিহাসের বিশেষ একটা জায়গায় আছে ম্যাচটা। এই মাঠেও আমাদের ইতিহাস জড়ানো আছে।’
সিলেটের উইকেটের সুনাম শুনেই বাংলাদেশে এসেছেন স্কট। যদিও এখনো উইকেট দেখার সুযোগ হয়নি তার। তবে সিরিজ জুড়ে ভালো ক্রিকেটটাই দেখতে চান এই ডাচ অধিনায়ক, ‘এখনো উইকেট দেখিনি। হয়তো আজ দেখব নইলে কাল। যদিও বিভিন্ন রিপোর্ট দেখেছি, সিলেটের উইকেটটা বেশ ভালো। ভালো ক্রিকেট খেলার আশায় আছি।’
বাংলাদেশকে নিজেদের কন্ডিশনে ফেভারিটই মানছেন স্কট। তবে ইতিহাস জড়ানো এই মাঠে সিরিজ জয়ের আশা করছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। প্রতিটা সিরিজ সবাই জেতার জন্যই খেলে। আশা করছি আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলব। যদি যথেষ্ট ভালো খেলতে পারি, তাহলে সিরিজ জেতার একটা সুযোগ আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় স্কোয়াডে আত্মবিশ্বাসটাও বাড়ছে সবার মধ্যে। বিশ্বকাপ আর কোয়ালিফায়ারে আমরা অনেক হাই-প্রেশার ম্যাচ খেলেছি। আমাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও বলছে, নিজেদের দিনে আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি।’
বাংলাদেশের মাঠে খেলা কতটা চ্যালেঞ্জের? স্কট উত্তর দিলেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে সকল বাস্তবতা মাথায় রেখে এভাবে, ‘আশা করছি এখানকার চ্যালেঞ্জটা আমরা উৎরে যাব। আমাদের দলের অনেকেই এই কন্ডিশনে খেলে গিয়েছে, উপমহাদেশের মাঠে আমরাও চাইব তাদের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে, নতুন যারা আছে তাদের সাথে সেসব শেয়ার করতে। কিন্তু এই সিরিজটা কঠিন হতে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা বলে কথা। অনেক দলই এখানে আসে, খেলে, সংগ্রামই করে। আমরা জানি সিরিজটা কঠিন হবে।’
আগামী ৩০ আগস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডস। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর। সিলেটে সবকয়টি ম্যাচই শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।