যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি করেছে, যার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ইইউর সব রপ্তানি পণ্যে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক অংশীদারের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান হলো। রোববার স্কটল্যান্ডে পাঁচ দিনের সফরে থাকা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের মধ্যে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর চুক্তির এ ঘোষণা আসে।
ট্রাম্প এর আগে ইউরোপীয় দেশগুলোর পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। নতুন চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি। এটি সবার জন্য ভালো একটি চুক্তি, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করবে।’
চুক্তির অংশ হিসেবে ইইউ আগামী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়সহ ৬০০ বিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানি খাতে আরও ৭৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। ভন ডার লিয়েন জানান, এলএনজি, তেল ও পারমাণবিক জ্বালানিতে বিনিয়োগের ফলে ইউরোপের রাশিয়ার ওপর জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে। এ ছাড়া কিছু রাসায়নিক পণ্য, কৃষিপণ্য এবং বিমান ও এর যন্ত্রাংশে কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না।
তবে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় হবে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৭৬ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ইউরোপ থেকে আমদানি ছিল ৬০৬ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প মনে করেন, এই বাণিজ্য সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রকে বাণিজ্য ঘাটতির মুখে ফেলছে।’
ইইউ পাল্টা শুল্কের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ির যন্ত্রাংশ, বোয়িং বিমান ও গরুর মাংসে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নতুন চুক্তিকে সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য ব্যয় বাড়বে। জার্মানির চ্যান্সেলর সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেন, স্থিতিশীল বাণিজ্য পরিবেশ ব্যবসা ও ক্রেতাদের জন্য অপরিহার্য। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি চুক্তিকে ইতিবাচক আখ্যা দেন।
ট্রাম্প সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং মঙ্গলবার অ্যাবারডিনে অবস্থান করবেন, যেখানে তার পরিবারের নতুন গলফ কোর্স আগামী মাসে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।