প্রথম লেগেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, কিন্তু শুরুতে গুছিয়ে উঠতে না পারার কারণে দ্বিতীয় লেগে ঘাম ঝরাতে হলো রুবেন আমোরিমের দলকে। তবে শেষ পর্যন্ত অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ৪-১ গোলে হারিয়ে এবং দুইলেগ মিলিয়ে ৭-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ইউরোপা লিগের ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে তারা। ফাইনালে প্রতিপক্ষ — টটেনহ্যাম হটস্পার।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ইউনাইটেডের জন্য সুখকর ছিল না। আতলেতিকোর মিকেল জাউরেগিজার দুর্দান্ত এক গোল করে প্রথমার্ধেই লাল শিবিরে চাপ বাড়িয়ে দেন। ইউনাইটেডের খেলায় তখন আতঙ্ক, এলোমেলো ভাব—প্রিমিয়ার লিগে চলমান হতাশারই যেন প্রতিচ্ছবি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামলেন সেই মানুষটা — মেসন মাউন্ট। চোটের কারণে মৌসুমজুড়েই ছন্দহীন এই মিডফিল্ডার যেন হঠাৎই জ্বলে উঠলেন। ৭২তম মিনিটে বাঁকানো এক দুর্দান্ত শটে সমতা ফেরান, ঘরের দর্শকদের হৃদয়ে আবারও প্রাণ ফেরান।
সেখান থেকেই খেলাটা পাল্টে গেল। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্রসে দুর্দান্ত হেড করে ক্যাসেমিরো গোল করেন, তার কিছুক্ষণ পর হইল্যান্ড করেন তৃতীয় গোল। আতলেতিক যখন মরিয়া হয়ে আক্রমণে উঠেছে, তখন গোলকিপার আগিররেজাবালা ভুল করে এগিয়ে এসে বল হারান, আর সুযোগটা কাজে লাগিয়ে হাফলাইন থেকে বল চিপ করে খালি জালে বল জড়িয়ে দেন সেই মাউন্টই — ম্যাচের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত!
চোটের কারণে সমালোচিত, ফর্ম নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ, ট্রান্সফার ফি নিয়ে বিতর্কিত — সেই মেসন মাউন্টই যেন নিজের উত্তর দিয়ে দিলেন এক ম্যাচেই।
প্রথম লেগের জয়ের পরও এদিন বিলবাও কিছুটা দাপট দেখায়। উইলিয়ামস ভাইদের ছাড়াও শীর্ষ স্কোরার সানসেটের অনুপস্থিতি ছিল স্পষ্ট, তবে ইউনাইটেডের ঝিম ধরা খেলায় তারা সুযোগ পেয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা কাজে লাগাতে পারেনি। ইউনাইটেডের তরুণ তারকা গারনাচোও প্রথমার্ধে এক দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন।
সব বদলে যায় বদলি খেলোয়াড়দের আগমনে। মাউন্ট আসার পর গতি ফেরে, একের পর এক আক্রমণে ধসে পড়ে বিলবাও রক্ষণ।
আমোরিম এই ম্যাচে আগের একাদশেই ভরসা রেখেছিলেন, কিন্তু মাউন্ট একাই যেন প্রমাণ করলেন — একটা পরিবর্তনই বদলে দিতে পারে গল্প।
এখন লক্ষ্য ডাবলিন — ইউরোপা লিগ ফাইনাল। সেখানে জিতলেই শুধু শিরোপা নয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে ফেরার টিকিটও পাবে ইউনাইটেড। এই দলটার যা অবস্থা, সেটাই হতে পারে এই মৌসুমের সবচেয়ে বড় জয়।