রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘মার্চ ফর গাজা’র গণজমায়েতের ঘোষণাপত্রে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত গণজমায়েতের মূল মঞ্চে এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তিনি।
ঘোষণাপত্রে মুসলিম বিশ্বকে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে দাবি তোলা হয় আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির।
এ এক বিপুল জনসমাগম, যেখানে গর্জে উঠেছে একটাই কণ্ঠস্বর— ‘গাজার পাশে দাঁড়াও, বর্বরতা বন্ধ কর!’
গণজমায়েতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
আয়োজনে ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক।
এ কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন একই মঞ্চে। কবি, শিল্পী এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় ব্যক্তিরাও যোগ দেন কর্মসূচিতে।

সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার সহযোগীদের যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকেই শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, মিরপুরসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে জমায়েত হয় উদ্যানে। বন্ধ হয়ে যায় শাহবাগ ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল।
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ’ এ সমাবেশের আয়োজন করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে কারওয়ান বাজার, শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনা মোতায়েন করা হয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়, রাজনৈতিক প্রতীক না আনতে এবং কেবল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের।
টিএসসি, তেজগাঁও ও খিলগাঁওয়ে ট্রেনের ছাদে চড়ে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন বহু মানুষ। মিছিলে দেখা যায় শিক্ষার্থী, ধর্মীয় নেতা, পেশাজীবী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদেরও। বেলা ৩টায় গণজমায়েত শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই উদ্যানে নামে জনতার ঢল।
মিছিলকারী অনেকেই বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা এবং বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড বহন করেন। ফিলিস্তিনি সংগ্রামের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে অনেকে গলায় জড়ান খোপকাটা হাজি রুমাল।