২০২২ সালে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় ঘটে যাওয়া ‘টিপকাণ্ড’ নিয়ে শিক্ষিকা লতা সমাদ্দার ও একঝাঁক শোবিজ তারকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক। নারীর কপালে টিপ নিয়ে কটুক্তি করার ঘটনায় সে সময় তিনি চাকরি হারিয়ে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন তিনি।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে শেরেবাংলা নগর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে সে সময়ের ভিকটিম তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় মালা, অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন, সুবর্ণা মোস্তফা, সাজু খাদেম, প্রাণ রায়, সায়মন সাদিক, মনোজ প্রামাণিক, স্বাধীন খসরু, চয়নিকা চৌধুরী, ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দেবী সান, নাজনীন নাহার চুমকি, সুষমা সরকার, কুসুম সিকদারসহ নাট্য অঙ্গনের ১৬ জন পরিচিত মুখকে।

মামলায় নাজমুল তারেক অভিযোগ করেছেন, ২০২২ সালে টিপ পরা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের সময় এসব তারকারা ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশের মানহানি ঘটিয়েছেন। তারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও বক্তব্য দিয়ে নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন, যার ফলে তার পেশাগত ও সামাজিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

২০২২ সালের ২ এপ্রিল রাজধানীর ফার্মগেটে একটি বাইক লতা সমাদ্দারের পায়ে লাগার জেরে পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি তাকে ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে কটূক্তি করেন। তখন পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ দেন লতা সমাদ্দর।
লতা সমাদ্দার অভিযোগ করে জানান, তিনি কলেজের পাশে হয়রানির শিকার হন। পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে তাকে কটূক্তি করেন।
লতার করা এ অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিক্রিয়া হয়। শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা লতার পক্ষ নিয়ে টিপ পরা ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদে অংশ নেন।
এ ঘটনার জেরে বিভাগীয় তদন্তে নাজমুল তারেক চাকরি হারান। পরে তিনি চাকরি ফেরত পেতে আইনি লড়াইয়ে যান। তার করা সেই মামলা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনি সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন। পুলিশ সদর দপ্তরে তিনি আবেদন জানান। অবশেষে ঘটনার দুই বছর পর তিনি মানহানির মামলা করলেন।