মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। এই অঞ্চলের ১২টিরও বেশি দেশে মার্কিন বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং সমুদ্রপথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব ঘাঁটিতে প্রায় ৪০ হাজার সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক অবস্থান করছেন। রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ।
যুক্তরাষ্ট্রের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর থেকে এসব ঘাঁটিগুলো ইরানের সম্ভাব্য টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেহরান আগেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা ‘সমস্ত বিকল্প খোলা রাখছে’। এরই মধ্যে ইরান কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধের সময় মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনার সংখ্যা এক লাখ ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। লোহিত সাগরে হুথি হামলা ও ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র আবারও সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে।
তবে ইরানের সম্ভাব্য বড় প্রতিক্রিয়া এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র কিছু ঘাঁটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত ১৯টি মার্কিন ঘাঁটি সক্রিয় রয়েছে। এসব ঘাঁটির বেশিরভাগই সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর অধীনে।
কাতার: আল উদেইদ ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এখানে সেন্ট্রাল কমান্ড এবং বিমান বাহিনীর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার রয়েছে। ৩৭৯তম এয়ার এক্সপিডিশনারি উইংসহ প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। সম্প্রতি স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে অনেক বিমান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বাহরাইন: মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম ফ্লিটের সদর দফতর বাহরাইনে অবস্থিত। সেখানে ৯ হাজার সেনা মোতায়েন এবং ‘ইউএসএস কার্ল ভিনসন’-এর মত সুপার ক্যারিয়ার জাহাজসহ বিপুল নৌবাহিনীর সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।
কুয়েত: ক্যাম্প আরিফজান ও আলি আল সালেম ঘাঁটিতে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। কুয়েত যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় ‘লজিস্টিকাল হাব’ হিসেবে কাজ করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: আল ধাফরা ঘাঁটিতে ৩৮০তম এয়ার এক্সপিডিশনারি উইং মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য ও ড্রোন পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি।
ইরাক: বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। আল আসাদ ও ইরবিল বিমান ঘাঁটি থেকে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে। গাজা যুদ্ধের পর এই ঘাঁটিগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
সৌদি আরব, মিশর, জর্ডান, সিরিয়া, ইসরায়েল, জিবুতি এবং তুরস্কেও মার্কিন ঘাঁটি সক্রিয়। কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস অনুযায়ী, তুরস্ক ও জিবুতি অন্যান্য কমান্ডের অন্তর্ভুক্ত হলেও মধ্যপ্রাচ্যের অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।