বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করে দেবে-এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তিকে বিদেশ থেকে ভাড়া করে এনে দেশ চালানো যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই মনে করছেন, কয়েকজন লোক, সংস্কার যারা করছেন; তারা কতগুলো বৈঠক করে, সংস্কার করে জনগণকে এগিয়ে দিলেন, আর সংস্কার হয়ে গেল? এভাবে সংস্কার হয় না। সংস্কার হতে হবে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
শনিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘জুলাই বিপ্লব: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি চাইলেন আর কালকেই পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। কাঠামোটা তৈরি করতে হবে এমনভাবে, যাতে করে সে ঘুষ না খায়। একইভাবে আমাদের যেই আমলাতন্ত্র, এটা আমাদের উন্নয়নের পথে একটা বড় বাধা।’
এটা নেগেটিভ ব্যুরোক্রেসি। নেগেটিভ ব্যুরোক্রেসিকে এখন পজিটিভ ব্যুরোক্রেসি করতে হলে যা যা করা দরকার, অর্থাৎ মূল কাজ হচ্ছে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। সেই বিষয়গুলো করতে হবে, যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন। কয়েকজন ব্যক্তিকে বিদেশ থেকে ভাড়া করে এনে কি দেশ চালানো যায়? যায় না। এই সহজ-সরল কথাটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’
পিআর বা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন রকম কথা বলতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। খুব জোর গলায় বলছে, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। আনুপাতিক হারের নির্বাচনটা কী, তা সাধারণ মানুষ বোঝেই না। আনুপাতিকটা কী জিনিস, সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন, বলতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সবার আগে সততা দরকার। সততা ছাড়া বিএনপি কিন্তু জনগণের কাছে দাঁড়াতে পারবে না। আজকাল পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন রকম খবর আসে। এই খবরগুলো বিএনপির সঙ্গে যায় না, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যায় না। তাই অবশ্যই যারা বিএনপি করবেন, জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করবেন, তাদের সবাইকে সৎ হতে হবে।’
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, জামায়াত নেতারা দেশের আনাচকানাচে বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে কারও বিরুদ্ধে কুৎসা নয়, সহনশীল আচরণের মাধ্যমে জনগণকে মুগ্ধ করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জিয়া পরিষদের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার, মহাসচিব এমতাজ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদ, যুগ্ম মহাসচিব আলীমুজ্জামান, মনোয়ার ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, নাজির আহমেদ, শহীদুল হক, শরীফুজ্জামান খান প্রমুখ।