ইরান ও ইসরায়েল একে অপরের ওপর হামলা বুধবার রাতেও চালিয়েছে।
বিবিসির লাইভ খবরে বলা হয়, এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীন অবস্থানে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এটা (ইরানে হামলা) করতে পারি, আবার না-ও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে চাই। তবে এটুকু বলতে পারি, ইরান এখন অনেক সমস্যায় আছে এবং তারা আলোচনা করতে চায়।’
আর ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তেহরান। ইরানের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা হোয়াইট হাউসের দরজায় লুটিয়ে পড়ব না।’
এরইমধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে সামরিকভাবে জড়িয়ে পড়ে, তবে তা হবে ‘অপূরণীয় ক্ষতির’ কারণ।

বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি আরো বলেন, ‘ইরান কখনো আত্মসমর্পণ করবে না!’
খামেনি বলেন, ‘যারা ইরান, এর ইতিহাস এবং এর জনগণকে জানেন, তারা কখনো হুমকির ভাষায় এই জাতির সঙ্গে কথা বলেন না। ইরানিরা সেই জাতি নয়, যারা মাথা নত করে।’
খামেনির এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ইরানের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ দাবি করেছেন। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এখন ইরানের আকাশসীমার সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণে রয়েছি। মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে, ট্রাম্প ইরানি নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব রাজধানী তেহরান ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি হোয়াইট হাউজে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প বর্তমানে ইসরায়েলের পরমাণু হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অংশগ্রহণের সম্ভাবনা বিবেচনা করছেন।
একটি সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে ফোর্ডোতে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা ভূগর্ভে নির্মিত। এটি ধ্বংসে প্রয়োজনীয় ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বিশেষ বোমা—যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই রয়েছে।
এদিকে, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত সাইপ্রাস কিংবা দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুমতি চায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসির প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক জোনাথন বেইল।
চলমান সংঘাতকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্ব অপেক্ষা করছে পরবর্তী পদক্ষেপের।