প্রীতির হ্যাট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ

টাইমস স্পোর্টস
3 Min Read
গোলের পর উল্লাসে প্রীতি। ছবি: বাফুফে

ভুটানের থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে মঙ্গলবার দেখা গেল লাল-সবুজের দারুণ দাপট। প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ ২-১ গোলে, শেষ পর্যন্ত প্রীতির দুর্দান্ত হ্যাট্রিকে নেপালকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল কিশোরীরা।

শুরু থেকেই খেলায় আধিপত্য ছিল বাংলাদেশের। বল পায়ে রেখে পাসে পাসে আক্রমণ সাজিয়েছে মেয়েরা। প্রথমার্ধে তিনটি অন টার্গেট শট নিয়েছে বাংলাদেশ, যেখানে নেপালের সুযোগ ছিল মাত্র দুটি। একমাত্র কর্নারও পেয়েছিল নেপাল। তবে মাঠের ছবিটা ছিল অন্যরকম, গতিময় আক্রমণে প্রতিপক্ষকে বারবার নাজেহাল করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

তবুও লড়াই থেকে ছিটকে যায়নি নেপাল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরার সোনালী সুযোগ পেয়েছিল তারা। সহজ ট্যাপ ইন শটটি গোলবারের উপর দিয়ে মেরে বসেন নেপালি ফরোয়ার্ড ভূমিকা। ওই মুহূর্তে গোল হলে ম্যাচে অন্যরকম চাপ তৈরি হতে পারত।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল ডান প্রান্ত। সেখানেই গতি ছড়িয়ে খেলেছেন পূর্ণিমা মারমা। তার দৌড়ে তাল মেলাতে পারেননি নেপালের লেফট-ব্যাক। পূর্ণিমার দ্রুতগতির ক্রস থেকেই একের পর এক সুযোগ তৈরি হয়েছে।

নেপাল চেষ্টা করেছে পাঁচজন ফরোয়ার্ড ও মিডফিল্ডার নিয়ে আক্রমণ গড়তে, লং বল খেলে অফসাইড ফাঁদ ভাঙারও কৌশল নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশি রক্ষণভাগ তা খুব একটা কার্যকর হতে দেয়নি।

ম্যাচের ৭০ মিনিটে মোমিতা খাতুনের জোরালো শট গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করে বিপদ সামলায় নেপাল। তবে ফিরতি কর্নারেই গোল হজম করে বসে তারা। সেখান থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ব্রেস পূর্ণ করেন প্রীতি। তিন মিনিট পরেই হ্যাটট্রিকের সুযোগ এসেছিল তার সামনে। বক্সের ভেতর থেকে ভলিতে চেষ্টা করলেও ঠিকঠাক সংযোগ করতে পারেননি।

৮০ মিনিটে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায় এক অদ্ভুত ঘটনায়। সহখেলোয়াড় সুরভীর ব্যাকপাস সরাসরি হাতে তুলে নেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক ইয়েরজান। নিয়মমতো নেপাল পায় ডি-বক্সের ভেতর থেকে ইনডাইরেক্ট ফ্রি-কিক। তবে সেটিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা।

এরপর ৮৬ মিনিটে আবারও আলো ছড়ালেন পূর্ণিমা। তার দুর্দান্ত গতির দৌড়ে ডান দিক থেকে বক্সে বল পৌঁছে যায় প্রীতির কাছে। সুযোগ হাতছাড়া করেননি তরুণী স্ট্রাইকার। জালে জড়ানো সেই বল তার হ্যাট্রিক পূর্ণ করে, যা এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক।

বাংলাদেশের শেষ গোলটি আসে থুইনুইয়ে মারমার পা থেকে। ফলে শেষ বাঁশি বাজার আগে ৪-১ ব্যবধান নিশ্চিত হয় লাল-সবুজের মেয়েদের।

৮২ মিনিটে প্রবল বৃষ্টি নামলেও মাঠের নিয়ন্ত্রণ হারায়নি মেয়েরা। ভেজা মাঠে বলের গতি সামলে নিয়ে পুরো সময় দাপট ধরে রেখেছে তারা।

৪ ম্যাআচে ৩ জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ভারতের নিচেই আছে বাংলাদেশ। ভারত ৩ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে শীর্ষে আছে। এই জয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের শক্ত অবস্থান আরও দৃঢ় করল বাংলাদেশের কিশোরীরা। প্রীতির হ্যাট্রিক, পূর্ণিমার বিদ্যুৎগতির উইং খেলা আর গোটা দলের সমন্বয় সব মিলিয়ে এই ম্যাচ হয়ে রইল দর্শকদের জন্য রোমাঞ্চকর এক সন্ধ্যা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *