পিআর পদ্ধতির জন্য মানুষ জীবন দেয়নি: হাফিজ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন। ছবি : ভিডিও থেকে
Highlights
  • মেজর (অব.) হাফিস বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি জুলাই আগস্টের শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় নাই। তার প্রধান কারণ হলো এখন যারা সরকারে আছেন, যে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে তারা এই চেতনাকে ধারণ করে না।’

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর  হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কি পিআর পদ্ধতিতে হবে নাকি আসনের পদ্ধতিতে হবে, এটির জন্য মানুষ জীবন দেয়নি। মানুষ জীবন দিয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন দেওয়া।’

শনিবার ঢাকার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন।  ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারবর্গকে সম্মাননা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইইবি।

পিআর বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হলো নির্বাচনী ব্যবস্থার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আসন বণ্টন হয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। অর্থাৎ নির্বাচনে যদি একটি রাজনৈতিক দল ১০ শতাংশ ভোট পায়, তাহলে সংসদেও তারা ১০ শতাংশ আসন নিশ্চিত করবে। এক্ষেত্রে দলটি যদি কোনো একটি আসনে জয়ী নাও হয় তবুও তারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মহারথী যারা একবার ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে গেছে, তারা এখন আর যেতে চায় না। এখন শুধু ঘুরায় আর প্যাঁচায়। সংস্কার তো একটা দরকার, সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।’

এসময় সংবিধান সংস্কারে ওঠা দাবির বিষয়ের কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন। রক্ত দিয়ে সংবিধান প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো ইতিহাসে নাই অনির্বাচিত ব্যক্তিরা সংবিধান সংশোধন করে। এখানে সেটাই প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। জনগণ ও সংসদের সম্মতি ছাড়া কীভাবে এরা সংবিধান সংশোধন করতে চায়? সংবিধানকে আমরা রক্ত দিয়ে ৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছি; সেটিকে তারা ছুড়ে ফেলে দিতে চায়!’

সরকারের সমালোচনা করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি জুলাই আগস্টের শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় নাই। তার প্রধান কারণ হলো এখন যারা সরকারে আছেন, যে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে তারা এই চেতনাকে ধারণ করে না।’

অন্তর্বর্তী সরকার সংশ্লিষ্টদের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা কখনো শেখ হাসিনার ১৭ বছরের এই অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করেন নাই। একমাত্র ড. আসিফ নজরুল মাঝে মধ্যে দু-চারটি কথা বলেছেন। বাকি এখন যারা উপদেষ্টা রয়েছেন, কর্তা ব্যক্তিরা রয়েছেন, এমনকি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, দেশবরেণ্য ব্যক্তি, আমরা সকলে তাকে শ্রদ্ধা করি; তিনিও হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও কখনো বলেননি।’

এই দেশ বীরদের ধারণ করতে পারে না মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সব সময়ই বিপ্লবে যারা জীবন দেন, বিজয়ের পরে তাদের মূল্যায়ন করা হয় না। বারবার জীবন দেয় সাধারণ মানুষ, আর এর ফল ভোগ করে একশ্রেণির কুটিল রাজনীতিবিদরা।’

এই রাজনীতিবিদরা উড়ে এসে সব কৃতিত্ব দাবি করে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা বারবার জাতিকে ভুল পথে নিয়ে যেতে চায়।’

হাফিজ উদ্দিন বলেন, গণ-আন্দোলনের পটভূমি নির্মাণ করেছিল বিএনপি। আর যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি, তারা এখন পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত। তারাই এখন জাতিকে সবক দিচ্ছে।

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *