যুদ্ধবিরতির দিনেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শর্ত লঙ্ঘন করে আক্রমণের অভিযোগ এনেছে ভারত। দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি শনিবার রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন।
তবে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদের দাবি, তারা কোনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেনি।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের প্রভাবশালী দ্য হিন্দুর অনলাইন সংবাদে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এর পাল্টা প্রতিরোধ হামলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই বলছে, কাশ্মির উপত্যকা শান্ত থাকলেও সেখানে কয়েকটি ড্রোন উড়তে দেখা গেছে।
আনন্দবাজার ডটকমের খবরে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার রাতে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘গত কয়েক ঘণ্টা ধরে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাও জবাব দিচ্ছে। এই লঙ্ঘন অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এর জন্য দায়ী পাকিস্তান।’
তিনি আরও জানান, ‘পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারতীয় সেনা।’
‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভাঙা বন্ধ করবে বলে আশাবাদী ভারত’, যোগ করেন তিনি।
বিক্রম মিশ্রি জানান, তাদের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন প্রতিহত করতে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরই আগে ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। দেশটির পক্ষ থেকে হামলায় বেশকিছু জঙ্গি আস্তানা ধ্বংসের কথা বলা হলেও পাকিস্তানের দাবি, অন্তত ৭০ জন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। পাশাপাশি তাদের পক্ষ থেকে ভারতীয় পাঁচটি জঙ্গি বিমান ও ৭৭টি ড্রোন ভূপতিত করার দাবি করা হয়।
তিনদিন পর শনিবার ভোরে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রত্যাঘাতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস (অভেদ্য দুর্গ)’ নামে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দেয়।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, ওই অভিযানে ভারতের সাতটি কৌশলগত স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পাঠানকোট বিমানঘাঁটি, উদমপুর বিমানঘাঁটি, গুজরাট ও রাজস্থানের বিমানঘাঁটি এবং ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণস্থল।
এসব হামলা-পাল্টা হামলার শনিবার বিকালে মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তার মধ্যস্থতায় দুই পরমাণু শক্তিধর দেশে ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে।
আর এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ আনল দিল্লি।