পদ্মা থেকে ২ মরদেহ উদ্ধার, অভিযোগ হত্যা করেছে বিএসএফ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া। ছবি : সংগৃহীত
Highlights
  • নিহত দুজন পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন নাকি সীমান্ত পেরিয়ে গরু আনতে গিয়েছিলেন তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেই আলাদা বক্তব্য পাওয়া গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পদ্মা নদীর আলাদা স্থান থেকে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই দুজনকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

নিহতরা হলেন-শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর-হঠাৎপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা সেরাজুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫) এবং একই এলাকার গোলাম মর্তুজার ছেলে সেলিম রেজা (৩৭)।

শনিবার পদ্মা নদীর শিবগঞ্জের পাকা ইউনিয়নের নিশিপাড়া ও বিশরশিয়া অংশ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে বিএসএফের হাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পায়নি বিজিবি।

স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা হত্যার কথা অস্বীকার করেছে বলে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই রাতে এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন সৈবুর আলী নামে এক রাখাল। পরে ৩১ জুলাই রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকার পদ্মা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকেও বিএসএফ সদস্যরা হত্যা করেছিল বলে দাবি স্থানীয়দের।

তারা জানান, একই রাতে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন শফিকুল ও সেলিম। এরপর তাদের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভারতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও পরিবারের সদস্যরা তাদের সন্ধান পায়নি।

এরই মধ্যে শনিবার বিকালে নিশিপাড়া চর এলাকায় শফিকুলের এবং বিশরশিয়া এলাকায় মাঝ পদ্মায় সেলিমের মরদেহ ভাসতে দেখতে পান স্থানীয় জেলেরা। পরে সেগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহত দুজন পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন নাকি সীমান্ত পেরিয়ে গরু আনতে গিয়েছিলেন তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেই আলাদা বক্তব্য পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শফিকুল ও সেলিম সীমান্ত পেরিয়ে গরু আনতে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। গরু নিয়ে ভারতের ধুলিয়ান ঘাট থেকে পদ্মায় নেমে পড়েন তারা। মাঝপথে বিএসএফ স্পিডবোট নিয়ে তাদের আটক করে। পরে হত্যা করে পদ্মায় ভাসিয়ে দেয়।

অন্যদিকে, মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সমির উদ্দীন বলেন, ‘ধারণা করছি পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে প্রবল স্রোতের কারণে তারা ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছিল। বিএসএফ চোরাকারবারি ভেবে তাদের আটক করে হত্যা করে থাকতে পারে।’

শিবগঞ্জ থানার ওসি মো. গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকার পদ্মা নদীতে দুজনের মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় বিজিবি। খবর পেয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ততক্ষণে সেগুলো প্রায় গলে গিয়েছিল। সে কারণে সুস্পষ্টভাবে আঘাতের চিহ্ন বোঝা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, ‘ওই দুজন ব্যক্তিকে বিএসএফ হত্যা করেছে কিনা আমরা নিশ্চিত নই। নিহতের পরিবারের সদস্যরাও আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।’

তবে স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএসএফ এই হত্যার কথা অস্বীকার করেছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *