নিষেধাজ্ঞার ভেতরেই ‘গণঅনশনে’ বসছেন জবি শিক্ষার্থীরা  

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
কাকরাইল মোড়ে টানা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন জবি শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার তোলা ছবি: ফোকাস বাংলা
Highlights
  • বাজেট বৃদ্ধি, একাডেমিক স্বীকৃতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

পুলিশি নিষেধাজ্ঞার ভেতরেই বাজেট বাড়ানোসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে ‘গণঅনশনে’ বসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর এ কর্মসূচিতে জবির সাবেক শিক্ষার্থীদেরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে ‘সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না আসায়’ গণঅনশনের ওই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দিনভর চলা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শেষে মধ্যরাতে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আজ ঐকমত্যে পৌঁছেছে—আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। দাবি পূরণ না হলে এই অবস্থান থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পিছু হটব না।’

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাতেও শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবস্থান করবেন। আর শুক্রবার জুমার নামাজের পর শুরু হবে গণঅনশন।

বাজেট বৃদ্ধি, একাডেমিক স্বীকৃতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

তৃতীয় দফায় পুলিশের নিষেধাজ্ঞা জারি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, হাইকোর্ট এলাকাসহ ৯টি স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা করেছে।

পুলিশের তৃতীয় দফায় জারি করা ওই নিষেধাজ্ঞায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা, কাকরাইল, শাহবাগসহ আশেপাশের এলাকায় জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

তবে এরআগে এসব স্থানে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে একাধিক সভা-সমাবেশ করার নজির রয়েছে।

জবি ‘শাটডাউন’ ঘোষণা

জবির চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে কাকরাইল মোড়ের টানা অবস্থান ও সমাবেশ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউনের’ ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর এই ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন।

এ দিন অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার মধ্যে রয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু, জবির পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবিত বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন এবং পুলিশের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।

এরআগে বৃহস্পতিবার সকালে হেয়ার রোডে, কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন শুরু করেন জাবির শিক্ষার্থীরা।

‘লং মার্চ টু যমুনা’

দাবি-দাওয়া আদায়ে বুধবার সকালে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি শুরু করলে কাকরাইলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পুলিশ তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে।

পরে দুপুরে ‘যমুনা’ চত্বরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হন।

এরপর আন্দোলনকারীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে টানা বিক্ষোভ চালিয়ে যান। রাত ১০টার পর সেখানে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বক্তব্য দেওয়ার সময় এক যুবক বোতল ছুঁড়ে মারলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে উপদেষ্টা সেখান থেকে সরে গেলেও রাতভর অবস্থান চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *