জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের দলের নেতা-কর্মীদের বিপদে ফেলে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। শুধু তিনি নন, তার পরিবার এবং যারা লুটপাট করে বিত্তশালী হয়েছেন, তারাও দেশ ত্যাগ করেছেন। এ ধরনের নেতৃত্বকে জাতির জন্য কল্যাণকর নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ফকিরগঞ্জ বাজারে এনসিপির উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পঞ্চগড়ে পৌঁছান এবং শুক্রবার কার্যালয় উদ্বোধন ও কর্মীসভায় অংশ নেন।
সভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষ স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করেছে, এবং এরা দেশের প্রায় সব সম্পদের মালিক হয়ে গেছে। মূলত একটি পরিবার-মুজিব পরিবার-এই সম্পদের দখল নিয়ে জমিদারি কায়েম করেছিল। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সেই জমিদারি ভেঙেছি। কিন্তু যদি আবার কোনো স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট বা চাঁদাবাজ গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তবে তার বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না বাংলাদেশে আবার ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠুক। যে কোনো অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িকতার দাবিকে ‘‘কথার ফুলঝুরি’’ বলে আখ্যায়িত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিগত আমলে আমরা দেখেছি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের জমিজমা দখল হয়েছে, অথচ তারা কোনো বিচার পাননি। আমরা চাই—একটি নতুন বাংলাদেশ, যেখানে সকল নাগরিক ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ন্যায্য অধিকার ও সুবিচার পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের লক্ষ্য হলো বৈষম্যহীন, ইনসাফপূর্ণ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়া। যেখানে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস থাকবে না। এই লক্ষ্যে যারা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা মিলে গঠন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-একটি নতুন শক্তি, যারা সাধারণ মানুষের কথা বলে, ইনসাফের রাজনীতি চায়।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। অনুষ্ঠান শেষে দলীয় নেতারা ঠাকুরগাঁও জেলার উদ্দেশে যাত্রা করেন।