স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কালজয়ী গান ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি’-র গায়ক ও সুরকার আপেল মাহমুদকে নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) অভিযোগ উঠেছিল, তিনি নাকি মুক্তিযোদ্ধা নন। এই অভিযোগ খণ্ডন করতে সোমবার কুমিল্লা সার্কিট হাউসে জামুকার শুনানিতে হাজির হয়ে তিনি প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি একজন সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন।
শুনানিতে আপেল মাহমুদ জানান, ১৯৭১ সালে ৩ নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান ও পরে ক্যাপ্টেন নাসিমের অধীনে নরসিংদী, আশুগঞ্জ, ভৈরব, হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের সময় তার বাঁ চোখের পাশে আঘাতও লাগে। পরে তাকে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
শুনানি শেষে আপেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপেল মাহমুদ একজন মুক্তিযোদ্ধা, সেটা আমাকে জীবিত থেকেই দ্বিতীয়বার প্রমাণ করতে হয়েছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা নই দাবি করে যেই অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি ভুল প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্যরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, আপেল মাহমুদের জমা দেওয়া কাগজপত্রে স্পষ্টভাবে তার সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র বেতারকর্মী হিসেবেই নয়, একেবারে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে তিনি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পান।
এই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী নাসরিন মাহমুদ, শব্দসৈনিক মনোরঞ্জন ঘোষালসহ আরও কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশাত্মবোধক গানে অবদানের জন্য আপেল মাহমুদ ২০০৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।