মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে বাড়ছে সন্দেহ ও শঙ্কা। তিনি দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করছেন, ইরানে হামলার ইঙ্গিত দিচ্ছেন নানাভাবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল বা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দুটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই ইরানে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যে আমেরিকার জড়িয়ে পড়া নিয়ে বাড়ছে গুঞ্জন। এ আলোচনায় নতুন রসদ জুগিয়েছে রাডার ফাঁকি দেওয়া আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান স্থানান্তরের খবর।
আল জাজিরার প্রতিবেদক অ্যালান ফিশার ওয়াশিংটন ডিসি থেকে এক প্রতিবেদনে বি-২ বোমারু বিমান স্থানান্তরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আমেরিকার সামরিক সরঞ্জামের সাম্প্রতিক স্থানান্তর এবং সেগুলোর সম্ভাব্য বার্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
আল জাজিরার ধারাবাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিজৌরির ঘাঁটি থেকে দুটি বি-২ বোমারু বিমান স্থানান্তর করা হয়েছে। আর যাত্রাপথে এসব বিমানে নতুন করে জ্বালানি নেওয়া হয়েছে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে।

ফিশারের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, বিমানগুলো অ্যামেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামে যেতে পারে। সেখান থেকে ৯ হাজার ৩০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ইরানে নেওয়া সম্ভব এগুলোকে। কারণ বোমারু বিমানের সঙ্গে থাকবে রিফুয়েলিং বিমান। মূলত ট্যাংকার হিসেবে পরিচিত রিফুয়েলিং বিমানগুলো। এগুলো চলতি কোনো বিমানে জ্বালানি স্থানান্তর করতে পারে।
আল জাজিরার প্রতিবেদকের মতে, বোমারু বিমানগুলোর গন্তব্য ভিন্নও হতে পারে। এগুলো ভারত মহাসাগরে আমেরিকার ডিয়েগো গার্সিয়া ঘাঁটিতে যেতে পারে। এ ঘাঁটিটি ইরানের অনেক কাছে।
বিমান সরানোর মধ্য দিয়ে আমেরিকা ইরানে হামলার ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
জানা যায়, বি-২ বোমারু বিমান ৩০ হাজার পাউন্ড বা প্রায় ১৩ হাজার ৬০৭ কেজি ওজনের বোমা বহন করতে পারে। ইরানের পরমাণু ক্ষেত্রে সম্ভাব্য হামলায় আমেরিকা এসব বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করতে পারে বলে আলোচনা আছে।
অ্যালান ফিশারকে বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, বিমান স্থানান্তরের ফলে কয়েক ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এর একটি হতে পারে বিমানগুলোকে ডিয়েগো গার্সিয়া ঘাঁটিতে রাখা। এটি অস্বাভাবিক নয়। এর লক্ষ্য হবে হুমকি কিছুটা বাড়ানো।
বিশেষজ্ঞের মতে, ডিয়েগো গার্সিয়াকে বেছে নেওয়ার কারণ হতে পারে আরব দেশগুলোর অবস্থান। এসব দেশ চাইবে না যে, তাদের ভূমি থেকে ইরানে কোনো হামলা চালানো হোক। কারণ ঘাঁটি থেকে যেকোনো ধরনের হামলা আরব দেশগুলোকে ইসরায়েল-যুদ্ধে টেনে নিতে পারে।
বোমারু বিমানগুলো যেহেতু রিফুয়েলিং ট্যাংকার সঙ্গে নিয়ে এসেছে, সেহেতু এগুলোর জ্বালানি সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকবে না। ফলে এগুলো ব্যবহার করে ইরানের ওপর হামলা করতে পারে আমেরিকা। যদিও এ আশঙ্কা খুবই সামান্য।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট বার্তা না দে ওয়া পর্যন্ত সন্দেহ ও শঙ্কা বাড়ছেই।