ঢাকা ও সিউল তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে ও কৌশলগত অংশীদারত্ব অনুসন্ধানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সিউলে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে চতুর্থ পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ সভার আয়োজন করে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (দ্বিপাক্ষিক-প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য) বিভাগের সচিব মো. নাজরুল ইসলাম এবং কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রথম উপমন্ত্রী পার্ক ইউনজু।
এ সভায় আলোচনার হওয়া বিষয়গুলো হলো- রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান অনুমোদন সিস্টেম (ইপিএস) এর অধীনে মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, কোরিয়ান ইলেকট্রনিক্স এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থানান্তর, শক্তি সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি।
এ সময় উভয় পক্ষ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলোতে পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়েও মতবিনিময় করেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শক্তির রূপান্তর, মৎস্যচাষ, জীববিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সামুদ্রিক বন্দর ও শিপইয়ার্ড আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়।
এ সভায় রাজনৈতিক আস্থা আরও গভীর করতে ও উন্নয়ন কৌশল একত্রিত করতে সম্মত হয় দুই দেশ। বাংলাদেশে উন্নত অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর জন্য ইডিসিএফ, কেওআইসিএ ও ইডিপিএফ গ্র্যান্ট ও ঋণের মাধ্যমে সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে কোরিয়া।
কোরিয়ায় উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট এবং উৎপাদন হাউসগুলোকে বাংলাদেশে তাদের শিল্পমূল্য শৃঙ্খলা সম্প্রসারণ করতে উৎসাহিত করার কথাও বলা হয়। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করে কোরিয়া।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ইপিএস প্রোগ্রামের অধীনে নিয়মিত অভিবাসন এবং কারিগরি শিক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।
কোরিয়ার পক্ষ বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে এবং তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে পাঠানোর জন্য চলমান সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে।
সভায় উভয় পক্ষ দুই দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের সফরের গুরুত্বও তুলে ধরেছে, যাতে বাংলাদেশ-রিপাবলিক অব কোরিয়া সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্বে পরিণত করা যায়।
উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ, কৌশলগত সুবিধা ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে আশ্বাস দেওয়া হয় এ সময়।
সচিব নজরুল ইসলাম কোরিয়ান উপমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।