সুপারস্টার নায়কদের মধ্যে সেন্স অব হিউমারে সেরা শাহরুখ খান। তিনি তা আরেকটিবার প্রমাণ করলেন ছেলের পরিচালক অভিষেক অনুষ্ঠানে। আরিয়ান খান ওয়েব সিরিজ ‘দ্য ব্যাডস অব বলিউড’ নিয়ে আসছেন। আর এই সিরিজের প্রিভিউ উন্মোচনের আয়োজনের পুরোটাই উপস্থাপনা করেছেন তিনি।
বুধবার (২০ আগস্ট) মুম্বাইতে জমকালো আয়োজনে কালো ব্লেজার–প্যান্ট পরে উপস্থিত হন শাহরুখ খান। এসময় তার ডান হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা দেখা যায়। উপস্থিতি সাংবাদিকদের উদ্দেশে এসময় শাহরুখ নিজেই জানান, “তোমরা জিজ্ঞেস করার আগেই আমি বলে দিচ্ছি, আমার হাতে চোট লেগেছিল। ছোট সার্জারি হয়নি, আসলে একটু বড় সার্জারি হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে এক–দেড় মাস লাগবে। তবে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড তোলার জন্য আমার এক হাতই যথেষ্ট।”
বলিউড বাদশা, কিং অব রোমান্স—কত নামেই না শাহরুখকে অভিহীত করা হয়। সারা দুনিয়ায় ১৫০ কোটির বেশি মানুষ তার ভক্ত বলে অনুমান করা হয়। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র গ্লোবাল সুপারস্টার তিনি। ফিল্মফেয়ার থেকে শুরু করে তাবদ দুনিয়ার বহু পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু ৩৩ বছরের ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে নাকি কোনো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছিল না। সে অরাধ্য পুরস্কার এবার শাহরুখের ঝুলিতে উঠতে যাচ্ছে। ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ২০২৫ সালের আসরে এসে তিনি পাচ্ছেন সেরা অভিনেতার পুরস্কার।
তিনি এ পুরস্কার পাচ্ছেন ‘জাওয়ান’-এর জন্য। এ পুরস্কারটি অবশ্য তিনি এককভাবে পাচ্ছেন না। ‘টুয়েলভথ ফেল’-এর অভিনেতা বিক্র্যান্ত ম্যাসির সঙ্গে পুরস্কারটি ভাগাভাগি করে নিতে হচ্ছে।
শাহরুখ খান ‘জাওয়ান’-এ দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বক্স অফিসে সুপারহিট ছবিটিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। তবে এ ছবির কারণে পুরস্কারপ্রাপ্তি তার অনেক ভক্তকেই বিস্মিত করেছে। তাদের মতে শাহরুখের হাতে এ পুরস্কার আরও বহু আগে আসা জরুরি ছিল।
ভক্তদের মতে, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘মাই নেম ইজ খান’সহ এরকম বহু ছবি ছিল যেগুলোতে তার অভিনয় অসাধারণ ছিল। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে তিনি পুরস্কার পাননি। একসময় তো শাহরুখ নিজেই বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড শোতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পাওয়া নিজেই নিজেকে ট্রল করতেন।
৫৯ বছর বয়সী এই মহাতারকাকে তিন দশক আগে ‘দিওয়ানা’ সিনেমায় প্রথম দেখা যায় বড় পর্দায়। যদিও তার ক্যারিয়ার শুরু টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘ফৌজি’ এবং ‘সার্কাস’ দিয়ে, তখন নাম ছিল আব্দুর রহমান।
১৯৯২ সালের ২৫ জুন রাজ কুমার পরিচালিত ‘দিওয়ানা’ মুক্তি পায়। ওই সিনেমায় ধনী গায়ক ‘ববির’ চরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ, তার নায়িকা ছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী দিব্যা ভারতী।
এরপরের তিন দশকে অন্য অনেক অভিনেতার মতই নানা ধরনের চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছেন শাহরুখ। বলিউডের পরিবর্তন, ভালো-মন্দে খাপ খাইয়েছেন নিজেকে। কখনও তার সাফল্যে বক্স অফিস ঝলমল করেছে, আবার একের পর এক ফ্লপ ছবি হতাশ করেছে ভক্ত-অনুরাগীদের।
অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা এবং ক্রিকেট বাণিজ্যের খাতাতেও নাম লিখিয়েছেন কিং খান। দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা বলিউড অভিনেতাদের একজন তিনি। সিনেমার সংখ্যা এবং আয়ের দিক থেকেও তিনি ভারতের শীর্ষ তারকাদের একজন।
২০২৩ সালে মুক্তি পায় শাহরুখের তিন সিনেমা পাঠান, জওয়ান ও ডানকি। বর্তমানে তিনি কিং সিনেমার শুটিং করছেন, যা মুক্তি পাবে আগামী বছর।