দীর্ঘ ১৩ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরেছে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট খেলে যাওয়ার পর এই মাঠে আর হয়নি কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। হোম অফ ক্রিকেটের দীর্ঘ ম্যাচ খরা কেটেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে। আর বাংলাদেশ এই প্রত্যাবর্তন রাঙাল দারুণ এক জয়ে। রবিবার সন্ধ্যায় প্রথমে পেসারদের দাপটে পাকিস্তানকে ১১০ রানে অল আউট করে দিয়ে পারভেজ হোসেন ইমনের অপরাজিত ঝড়ো এক ফিফটিতে ১৫.৩ ওভার ব্যাট করে ৭ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ। ২৭ বল হাতে রেখে পাওয়া সহজ এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন লিটনরা।
পাঁচ ছক্কা আর তিন চারে ৩৯ বলে ৫৬* রানে অপরাজিত ছিলেন ইমন। দল রান তাড়ায় নেমে ৭ রানে দুই উইকেট হারালেও তাওহিদ হৃদয়ের সাথে ৬২ বলে ৭৩ রানের জুটিতে জয়ের ভিত পায় বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জিতল বাংলাদেশ।
সিরিজ শুরুর আগের দিন অধিনায়ক লিটন বলেছিলেন, হাই স্কোরিং ম্যাচ না হলেও সিরিজটা জমবে বলে তার আশা। লিটনের সেই আশায় শুরুতেই গুড়েবালি। এক সিরিজ আগেই বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করা পাকিস্তানকে খুঁজে পাওয়া গেল না এই ম্যাচে কোথাও। তাসকিন আহমেদ-তানজিম সাকিব-মোস্তাফিজুর রহমানদের শুরুতেই এলোমেলো ব্যাটিং। এক ফখর জামান ছাড়া সবার মধ্যেই ছিল তাড়াহুড়ো। শেষদিকে আব্বাস আফ্রিদির তিন ছক্কাতে যা একটু সুশ্রী হয়েছে স্কোরবোর্ড। তবুও বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের অসুবিধা যা হয়েছে শুধু প্রথম তিন ওভারের মধ্যে তানজিদ হাসান আর লিটনের উইকেট হারানোতে। অভিষিক্ত সালমান মির্জার বলে স্লিপে ফখরের হাতে ক্যাচ দেন শেষ ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ৭৩* রানের ইনিংস খেলা তানজিদ। অধিনায়ক লিটনকেও থামিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। শট খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন লিটন, ডানদিকে ঝাপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন খুশদিল।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৬২ বলে ৭৩ রানের জুটিতে ম্যাচের বাকি গল্পের পুরোটাই লিখেছেন ইমন। নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ফিফটিটা ছুঁয়েছেন ইনিংসে নিজের তৃতীয় চার মেরে। এর আগে ছক্কা মেরেছেন মোট পাঁচটা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাইম আইয়ুবের ফুল লেংথ বল আছড়ে ফেলেছেন স্লগ সুইপে লং অনের ওপারে। দ্বিতীয় ছক্কাটা মেরেছেন রীতিমতো এক হাতে।
সালমানের লেংথ বলে এগিয়ে এসে এক হাতে যেভাবে শট খেলেছেন, তাতে মনে হচ্ছিল মিড অনে বুঝি ধরাই পড়ে যাবেন। তবে এর ভালো টাইমিং হয়েছে তার, অনায়াসেই বল পেরিয়ে গেছে সীমানা। এরপর স্লগ সুইপে মোহাম্মদ নওয়াজকে তৃতীয় ছক্কাটা মেরেছেন। তবে ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে ফাহিম আশরাফের ওপর দিয়ে। টানা তিন বলে দুই চার এক ছক্কায় ছুঁয়েছেন ফিফটি। সালমানের বলে চার মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন জাকের আলী অনিক। এর আগে ২ ছক্কা ও ২ চারে ৩৭ বলে ৩৬ রান করা হৃদয় বোল্ড হয়েছেন আব্বাস আফ্রিদির বলে।