সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যরা রোববার দিনভর রাজধানীতে যে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন তা স্থগিত করা হয়েছে দু’দফা আলোচনার পর।
গ্রেপ্তার করা সাবেক সৈনিক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস এবং বাকি তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেলে এ আন্দোলন স্থগিত করা হয়। তবে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তারা ঢাকায় অবস্থান করবেন বলে জানান।
রোববার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বরখাস্ত সৈনিক মো. নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে। সোমবার লেফটেন্যান্ট ইফতেখার স্যারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তার মুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। আর চাকরির পুনর্বহালের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। যাদের চাকরির মেয়াদ ১০ বছরের নিচে, তাদের চাকরি ফেরত দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আর যাদের চাকরির মেয়াদ নেই, তাদের পেনশনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’
‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের প্রতি সদয়। তারা আমাদের দুটি বিকল্প দিয়েছেন। যারা ইতোমধ্যে রেকর্ডেড কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদন করতে হবে না। আর যারা আবেদন করেননি কিংবা রেকর্ড সম্পন্ন হয়নি, তাদের আজ রাতের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। আমরা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফ স্যারের বরাবর সেই আবেদনগুলো পাঠাবো। আমরা আশা করি, আজকের আলোচনা সেনা প্রধানের কাছে উপস্থাপন করা হবে।’
আন্দোলন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী আমাদের লিখিত আশ্বাস দেবে এবং আমরা লিখিতভাবে জানাব যে, এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে না। তবে দাবি আদায় না হলে আমরা আবারো আন্দোলনে ফিরব। কাল আমরা দেখব, নাইমুলকে মুক্তি দেওয়া হয় কিনা। আজ আমরা সবাই ঢাকায় অবস্থান করব। যদি মুক্তি ও দাবি নিয়ে কোনো লিখিত নিশ্চয়তা না পাই, তাহলে আবার কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

এর আগে রোববার সকালে চার দফা দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। পরে দুপুরে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসেন সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল। বিকালে আলোচনা শেষে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। শুরু হয় উত্তেজনা। এ সময় আন্দোলনকারীরা সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং জানিয়ে দেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না।
উত্তজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই সন্ধ্যা ৬টায় আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুরু হয় দ্বিতীয় দফা বৈঠক, যা শেষ হয় রাতে। বৈঠক শেষে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল প্রেসক্লাব এলাকা ত্যাগ করে। আন্দোলনকারীদের একাংশ প্রতিনিধি দলের পিছু নিলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা আসে।