রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, এ বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে চুক্তি ছিল, তবে রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ আর তাদের কাছে নেই। রাখাইন এখন আরাকান আর্মির হাতে। তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি না করলে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে না।
বৃহস্পতিবার নীতি গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা, রাখাইন ও মিয়ানমারের পরিপ্রেক্ষিত: বাংলাদেশের ঝুঁকি’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সম্প্রতি ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সমালোচনা করেন বক্তারা।
তারা বলেন, সীমান্তে প্রতিবেশী বদলে গেছে। ভারতও মিজোরাম সীমান্তে আরাকান আর্মির সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। আমাদেরও তা করতে হবে। মানবিক করিডোর সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগটি সম্প্রতি অহেতুক বিতর্কের কারণে নষ্ট হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে, তা একসময় বাংলাদেশের ভৌগলিক অখণ্ডতার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাখাইনের ১৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে মাত্র ৪ লাখের মতো আছে এখন সেখানে। প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে। এই অবস্থা চলমান থাকলে রাখাইন একসময় রোহিঙ্গাশূন্য হতে পারে। তখন আর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব না। তাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত আরাকান আর্মির সঙ্গে সামরিক, ব্যবসায়িক ও মানবিক যোগাযোগ স্থাপন করা প্রয়োজন।’
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আঞ্চলিক জোট আসিয়ান একটি সহায়ক চ্যানেল হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক দিলারা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের স্বার্থেই সীমান্তবর্তী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা জরুরি। এটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তার ইস্যু।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিসের প্রধান নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসির, মালয়েশিয়ার সুলতান জয়নুল আবেদিন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. মাহবুবুল হক, ডেইলি স্টারের কূটনৈতিক প্রতিবেদক পরিমল পালমা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন নীতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী শাকিল আহমেদ।