পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) শুরুর দিককার গল্প বললে লাহোর কালান্দার্সের নাম আসবে তালিকার নিচের দিকেই। ২০১৬ থেকে ২০২০—এই পাঁচ বছরে তারা ছিল মূলত উপস্থিতির জানানমাত্র, শিরোপা তো দূরের কথা, ফাইনালেও পা রাখতে পারেনি একবারও। ধারাবাহিকতা ছিল না, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিও ছিল প্রকট। কিন্তু ২০২১ সালে সবকিছু বদলে যেতে শুরু করে—কারণ, সে বছর দায়িত্ব নেন এক তরুণ বাঁহাতি পেসার, নাম শাহিন শাহ আফ্রিদি।
ক্যাপ্টেন শাহিনের প্রথম বছরেই লাহোর চ্যাম্পিয়ন হয়নি, তবে বদলের সুরটা শোনা গিয়েছিল স্পষ্টভাবে। পরের বছর, ২০২২ সালে, লাহোর পেল তাদের প্রথম পিএসএল শিরোপা। শাহিন ছিলেন সেই দলের নায়ক—অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার, আর বল হাতে ছিলেন বিধ্বংসী। ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন আসরের সেরা বোলার।
যারা ভেবেছিল এটি এক মৌসুমের কাকতালীয় ঘটনা, তারা ২০২৩ সালে পেয়েছিল জবাব। টানা দ্বিতীয়বার ট্রফি জিতে লাহোর প্রমাণ করে—এটি ছিল পুনর্জন্ম, দুর্ঘটনা নয়। ফাইনালে শাহিন ব্যাট হাতে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন, এরপর বল হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। ওই মৌসুমেও ১২ ম্যাচে ১৯ উইকেট নেন এই বাঁহাতি পেসার।
২০২৪ সালে কিছুটা ছন্দপতন হয়, তবে সেটি যেন ছিল ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতা। ২০২৫ সালে আবারও ফিরে আসে লাহোরের দাপট। শাহিনের অধিনায়কত্বে দল জিতে নেয় তৃতীয় পিএসএল শিরোপা—চার বছরে তিন ট্রফি, এক কথায় বিস্ময়কর। ১৩ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে ফের শীর্ষ উইকেটশিকারির তালিকায় থাকেন শাহিন।
কেবল মাঠেই নয়, ড্রেসিংরুমেও তার প্রভাব অমূল্য। ঠাণ্ডা মাথা, সাহসী সিদ্ধান্ত আর আত্মবিশ্বাস জাগানিয়া নেতৃত্বে তিনি গড়ে তুলেছেন এমন একটা সংস্কৃতি, যেখানে হার নয়, শুধু জয়ের গল্প লেখা হয়।
একসময় যারা ছিল টেবিলের তলানিতে, তারাই এখন তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। আর এই রূপকথার নায়ক? একজনই—শাহিন শাহ আফ্রিদি। যিনি বদলে দিয়েছেন কেবল একটি দল নয়, বদলে দিয়েছেন পিএসএলের অধিনায়কত্বের সংজ্ঞাও।