সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিন সোমবার সকাল থেকে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয় চত্বর ভরে ওঠে শত শত বিক্ষোভকারীতে। বিক্ষোভকারীদের নানা ধরনের স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সরকারেরর প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র — সচিবালায়।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতৃত্বে মিছিল-সমাবেশ চলছে। পরে পুরো সচিবালয় এলাকা ঘুরে মিছিলকারীরা প্রতিবাদ জানান।
প্রথম দফায় শনিবার থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর চলমান আন্দোলনের ভেতরেই রোববার সন্ধ্যায় ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করল সরকার। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০১৮ সালের আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, নতুন অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত চারটি আচরণকে ‘অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. অনানুগত্য বা শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কার্যকলাপ, ২. যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, ৩. অন্য কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাধা বা উসকানি দেওয়া এবং ৪. অন্যদের কর্মবিরতিতে প্ররোচিত করা।
অধ্যাদেশে বলা হয়, এ ধরনের অপরাধে কর্মচারীকে ‘অবনমিত’, ‘চাকরিচ্যুতি’ বা ‘বরখাস্ত’ করার বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার সকালে ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ে ফের শুরু হওয়া আন্দোলনে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘অবৈধ কালো আইন মানি না’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও লড়াই কর’ ইত্যাদি।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন’ সংশোধনে প্রস্তাবিত ওই অধ্যাদেশে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে, যা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তৈরি করেছে তীব্র অসন্তোষ।
তারা বলছেন, ‘এটি মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।’
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে তা পর্যালোচনার দ্বায়িত্বে রয়েছন চারজন উপদেষ্টা।
আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে ‘সচিবালয় অচল করে দেওয়ার মত কঠোর কর্মসূচি’তে যাবেন তারা।