সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ছোঁয়ার একদম কাছাকাছি গিয়েও শেষ মুহূর্তে হতাশায় ডুবে গেল বাংলাদেশ। রবিবার ভারতের অরুণাচল প্রদেশে অনুষ্ঠিত শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে স্বাগতিক ভারতের কাছে টাইব্রেকারে ৪–৩ ব্যবধানে হেরে ট্রফি হাতছাড়া হলো বাংলার কিশোরদের। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাওয়া বাংলাদেশের কিশোররা চোখের জলে শেষ করল সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ মিশন।
ম্যাচের শুরুটা হয়েছিল ভারতের দাপটেই। প্রথমার্ধেই সরাসরি ফ্রি–কিক থেকে চমৎকার এক গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন শামী। বলটি এতটাই নিখুঁত ছিল যে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন বলের ফ্লাইট বুঝতেই পারেননি। শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলা ভারত বারবার আক্রমণ সাজায় ডান দিক দিয়ে, যেখানে রোহেন সিংয়ের গতি আর ক্রস বারবার ভুগিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে।
তবে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ২০ মিনিট পর থেকেই মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে শুরু করে, সেকেন্ড বল জিতে দ্রুত কাউন্টার–অ্যাটাকে ওঠে দল। ভারতীয়দের ছন্দে ধাক্কা লাগতে থাকে, যদিও গোলের দেখা তখনও মেলেনি।
বাংলাদেশকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন মাহিন। একাধিক ওয়ান–অন–ওয়ান সেভে দলকে বারবার বিপদ থেকে বাঁচান তিনি। সেট–পিস থেকে গোল করার খ্যাতি রাখা বাংলাদেশ ছিল যথারীতি বিপজ্জনক, কর্নার আর ফ্রি–কিকে তৈরি করে একের পর এক সুযোগ।
শেষমেশ ৬২ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত সমতায় ফেরে দল। কর্নার থেকে গোলমুখে তৈরি হওয়া জটলার মধ্য থেকে বল জালে পাঠিয়ে দেন জয় আহমেদ। এরপর দুই দলই গোলের সুযোগ তৈরি করে, তবে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শুরুর পর প্রথম তিনটি শট নিখুঁতভাবেই জালে পাঠায় বাংলাদেশ। মাহিন আবারও ঝলক দেখিয়ে আটকে দেন ভারতের ১০ নম্বর আরবাশের শট। কিন্তু সব বদলে যায় চতুর্থ স্পটে এসে। অধিনায়ক ফয়সাল মারেন গোলপোস্টের উপর দিয়ে, আর পঞ্চম শট শাহেদের পা থেকে গিয়ে সুরাজ সিংয়ের গ্লাভসে আটকে যায় ।
ভারত এরপর ঠান্ডা মাথায় তাদের বাকি পেনাল্টিগুলো জালে জড়ায়, তুলে নেয় শিরোপা।
বাংলাদেশের জন্য এটি হৃদয়ভাঙা পরিণতি। কিন্তু গোটা টুর্নামেন্টে দলটি যে লড়াকু মানসিকতা, ট্যাকটিক্যাল সচেতনতা এবং দলীয় সংহতির পরিচয় দিয়েছে, তাতে আশার আলো থাকছেই। শিরোপা না এলেও অর্জন ছিল অনেক।