বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের ৭৩ জন শিল্পীর শতাধিক শিল্পকর্মের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে প্রাচ্য-চিত্রকলা অনুশীলন সংঘ ও লার্নিং ডিজাইন স্টুডিয়ো। ‘পবিত্র শান্তির জাগরণ: বাংলার বুদ্ধ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে বুদ্ধের জীবন, দর্শন ও আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারের চিরন্তন ভাবনাগুলোর প্রাচ্য-শৈলী দেখা যাবে। ঢাকার ধানমন্ডিতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে লা গ্যালারিতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে।
কিউরেটর মিখাইল ইদ্রিস জানিয়েছেন— প্রদর্শনীতে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য ও সিরামিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলোতে ঐতিহ্যবাহী কৌশল ও সমসাময়িক শৈল্পিক ভাষার সংমিশ্রণ ঘটেছে। শিল্পীরা ব্যবহার করেছেন তেলরঙ, জলরঙ, গোয়াশ, ওয়াশ, এগ টেম্পারা, রিভার্স পেইন্টিং, বাটিক, চারকোল, কলম, অ্যালকোহল বেসড কালির কাজ। এমনকি অগ্নিদগ্ধ বঙ্গবাজারের ছাই ব্যবহার হয়েছে, যা রূপান্তর ও পুনর্জন্মের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। দর্শনার্থীরা এছাড়া পাবেন রিকশাচিত্র, সিনেমার ব্যানার চিত্র, ক্যালিগ্রাফি, সুঁই সুতার কাজ প্রভৃতি।

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে এই প্রদর্শনী উপলক্ষে রয়েছে সেমিনার, শিল্পালোচনা, পুঁথিপাঠ, চর্যাগান, নৃত্য ও সংগীত। আগামী ১০ মে বিকেল ৫টায় ‘বুদ্ধের দর্শন ও চর্যাগান’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপনা করবেন ড. সাইমন জাকারিয়া, নূরুননবী শান্ত ও সাধিকা সৃজনী তানিয়া।
আগামী ১৩ মে সন্ধ্যা ৬টায় মনোরঞ্জন বালা রচিত ‘গৌতম বুদ্ধ গীতিকাব্য’ অবলম্বনে পাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশন করবেন শাহ আলম দেওয়ান, মনোজ রায়, মজুমদার বিপ্লব ও অনিন্দ্য অমাত। আগামী ১৫ মে বিকেল ৫টায় ‘হীরকসূত্র, বুদ্ধের প্রতিচ্ছবি ও প্রাচ্যধারার ছাপচিত্র’ শীর্ষক শিল্প আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক ড. রশীদ আমিন। সন্ধ্যা ৭টায় সংগীত, নৃত্য ও বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন করবেন অরিত্রি নন্দী, প্রাপ্তি ঘোষ, বাপ্পী পাল, বদিউজ্জামান খান (ওমি), অরুন্ধতী কর, সুবর্ণ চক্রবর্তী তন্ময় ও জাহাঙ্গীর আলম।

‘পবিত্র শান্তির জাগরণ: বাংলার বুদ্ধ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীর সমাপনী আগামী ১৬ মে। সোম থেকে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। ১৬ মে বিকেল ৫টায় ভাবসাধকদের চর্যাপদের গানের পুনর্জাগরণের আসর উপস্থাপনা করবেন ভাবনগর ফাউন্ডেশনের সাধকশিল্পীরা।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ নবীন শিল্পীদের বিকাশে নিয়মিত প্রদর্শনী, কর্মশালা, প্রকাশনা, বৃত্তি ও সামাজিক উদ্যোগ পরিচালনা করে আসছে। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের সহযোগিতায় গৌতম বুদ্ধের জীবন ও দর্শনের এই শিল্পকর্ম প্রদর্শনী বিশ্বে শান্তি সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির আশা জাগাবে বলে আয়োজকদের দৃঢ় বিশ্বাস।