বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ মৌসুমে অনুমতি ছাড়া হজ পালন না করার অনুরোধ জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হজ ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সৌদি সরকারের নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মানা অত্যাবশ্যক।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুধুমাত্র ‘বৈধ হজ পারমিটধারীরাই’ এ বছর মক্কা ও আশপাশের পবিত্র এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন। ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে গিয়ে হজ পালনের চেষ্টা করলে কেবল ব্যক্তিকেই নয়, তাকে সহায়তাকারীকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘হজ পারমিট’ ছাড়া কেউ মক্কায় প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে ২০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা গুনতে হবে। পাশাপাশি, হজ পালনে সহায়তা করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা, যানবাহন বাজেয়াপ্তকরণ এবং বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে বহিষ্কারের মতো শাস্তি দেওয়া হবে। এছাড়া, যারা নির্ধারিত সময়ের বাইরে সৌদি আরবে অবস্থান করবেন, তাদের পরবর্তী ১০ বছর দেশটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
এ বছর ২৯ এপ্রিল (১ জিলকদ) থেকে ১০ জুন (১৪ জিলহজ) পর্যন্ত হজ মৌসুমে এই কঠোর আইন কার্যকর থাকবে। এ সময় ভিজিট ভিসাধারী কেউ মক্কা, মিনা, আরাফাত বা মুজদালিফায় প্রবেশ করতে পারবেন না। সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে নজরদারি জোরদার করেছে এবং ভিজিট ভিসাধারীদের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা শুধু সৌদি আরব নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত দায়িত্ব। বাংলাদেশের প্রায় ৩৫ লাখ প্রবাসী সৌদি আরবে কর্মরত এবং এখান থেকেই আসে দেশের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। হজ সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গ হলে তা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
তিনি বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অননুমোদিতভাবে হজ পালনে অংশ না নিয়ে সরকারের নির্ধারিত চ্যানেল ও অনুমোদিত পদ্ধতিতে হজে অংশগ্রহণ করুন।’
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে বাংলাদেশের হজ ফ্লাইট। এ বছর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাবেন মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১০ জুন থেকে।