বাংলা চলচ্চিত্রের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে এসেছিলেন সালমান শাহ। নব্বই দশকের শুরুতে যখন ঢালিউডে নায়ক সংকট তীব্র, ঠিক তখনই তরুণ, স্টাইলিশ ও আধুনিক রূপে হাজির হয়ে দর্শকের হৃদয় জয় করে নেন তিনি। খুব অল্প সময়েই গড়ে ওঠে তার বিশাল ভক্তগোষ্ঠী, যা আজও বিস্ময় জাগায়।
মাত্র ২৫ বছর বয়সে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই তার জীবনাবসান ঘটে। সরকারি সংস্থাগুলোর তদন্তে এ মৃত্যু আত্মহত্যা বলা হলেও, ভক্তরা সেই ব্যাখ্যা কখনোই মেনে নেননি। আজও তার মৃত্যু রহস্য ঘিরে নানা বিতর্ক, নানা প্রশ্ন, নানা আবেগ। এই রহস্যময় বিদায়ই তাকে পরিণত করেছে কিংবদন্তিতে।
চার বছরের ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘সুজন সখী’র মত দর্শকনন্দিত ছবি। তার অভিনয় ছিল প্রান্তবন্ত, সংলাপ বলার ভঙ্গি ছিল আলাদা, ফ্যাশন সেন্স ছিল সময়ের থেকে এগিয়ে।
প্রতি বছর মৃত্যুবার্ষিকীতে ভক্তরা কান্নায় ভিজে ওঠেন, সামাজিক মাধ্যমে স্মৃতিচারণ হয়। অনেকেই বলেন—‘সালমান বেঁচে থাকলে বাংলা সিনেমার ইতিহাস অন্যরকম হতো।’ তাঁর শূন্যতা এখনো পূরণ হয়নি, আর হয়তো কোনোদিনই হবে না।
সালমান শাহ আজ শুধু একজন তারকা নন, তিনি হয়ে উঠেছেন এক অনুভূতির নাম, এক বেদনাভরা স্মৃতির নাম। মৃত্যু তাকে নিভিয়ে দেয়নি, বরং আরও উজ্জ্বল করেছে। তার জীবন ছিল ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু প্রভাব অনন্তকালীন।