সিলেটে পুকুরে লুকানো দেড় লাখ ঘনফুট ‘সাদাপাথর’ উদ্ধার

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
সিলেটের এবার পাঁচটি পুকুর থেকে ‘সাদাপাথর’ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: টাইমস

সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকায় পুকুর ভরাটের আড়ালে বিপুল পরিমাণ ‘সাদাপাথর’ লুকিয়ে রাখার কৌশল উদঘাটন করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ধোপাগুল ও লালবাগ এলাকার পাঁচটি পুকুর থেকে এক্সকাভেটরের সাহায্যে প্রায় দেড় লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইৎ বলেন, ‘ভোলাগঞ্জ থেকে লুট করে আনা এসব পাথর পুকুরে ভরাটের নামে লুকানো হয়েছিল।’ তিনি জানান, যতই খনন করা হয়েছে, ততই পাথর বেরিয়েছে। এগুলো উদ্ধার করে ভোলাগঞ্জে পাঠানো হচ্ছে।’

অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকার মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে এপিবিএন সদস্যরাও অংশ নেন।

ইউএনও বলেন, ‘এসব পুকুরের মালিকদের খোঁজ মেলেনি। তাদের শনাক্ত করা গেলে গ্রেপ্তার করে নিয়মিত মামলায় অভিযুক্ত করা হবে। অবৈধভাবে মজুদ বা লুকানো পাথরের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এর আগে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম সাদাপাথর উদ্ধারে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সেই সময়সীমা শেষ হয় গত মঙ্গলবার। এ সময় ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা স্বেচ্ছায় সাড়ে ছয় লাখ ঘনফুট পাথর ফেরত দেন। একই সঙ্গে প্রশাসনের অভিযানে উদ্ধার হয় আরও ১৯ লাখ ঘনফুট পাথর। সব মিলিয়ে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে ২৬ লাখ ঘনফুট উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ ঘনফুট সাদাপাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম।

প্রশাসনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর সিলেট জেলায় অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

২৬ আগস্ট জারি করা এক আদেশে জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাসমূহে প্রাকৃতিক সম্পদ ও পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও পাচারের ঘটনা ঘটছে। এসব কার্যক্রম পরিবেশ ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের ক্ষতি করছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ ও বিক্রয়ের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকেই সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর ও ধলাই নদীতে প্রকাশ্যে পাথর লুট শুরু হয়। আনুমানিক দুইশ থেকে আড়াইশ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে বলে প্রশাসনের ধারণা।

এরপর থেকেই বিশেষ টাস্কফোর্স বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। মাটির নিচে ও বালুর স্তরে লুকানো পাথর উদ্ধার হচ্ছে, তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *