গাজা শহরের দখল নিতে পূর্ণমাত্রার স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইতোমধ্যে দক্ষিণ গাজার জয়তুন এলাকায় দেড় হাজারের বেশি বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।
রেস্কিউ সার্ভিসের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ‘গোটা এলাকা এখন ধ্বংসস্তূপ। ঠাই নেওয়ার মতো গোটা দক্ষিণ জয়তুনে আর কোনো ভবন অবশিষ্ট নেই!’
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ভবন ধ্বংসের জন্য এক্সকাভেটরের পাশাপাশি বোমা বহনকারী রোবট ব্যবহার করছে।
ওই এলাকায় প্রতিদিন গড়ে সাতটি জায়গায় রোবটের সাহায্যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং বিমান ও ড্রোন থেকে বোমা ফেলে বিভিন্ন ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মাহমুদ বাসাল।
এ ধ্বংসাত্মক আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে দিগ্বিদিক ছুটছেন দক্ষিণ জয়তুনের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি ছেড়ে ৮০ শতাংশ বাসিন্দাই গাজার পশ্চিম বা উত্তরাঞ্চলের দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে ভিডিও বিশ্লেষণ করে সিএনএন জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার ‘আল-নাসের হাসপাতালে’ ইসরায়েলি বাহিনী তিন দফা হামলা চালানোর প্রমাণ মিলেছে।

সিএনএন জানায়, গত সোমবার প্রথম দফা হামলার ঠিক নয় মিনিট পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার হামলা চালায় ইসরায়েল। পরের দুই হামলায় সময়ের পার্থক্য কয়েক সেকেন্ড। কাজেই প্রাথমিকভাবে দুই হামলাকে একই হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। এই যুদ্ধ কৌশল ‘ডাবল ট্যাপ’ নামে পরিচিত।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিমান নয়, বরং দেড় মাইল দূরে থাকা ইসরায়েলি ট্যাংক বহর থেকে ছোড়া গোলার আঘাত হানে ‘আল নাসের হাসপাতালে’।
ভয়াবহ ওই হামলায় রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), আল জাজিরা, মিডল ইস্ট আইসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পাঁচ সাংবাদিকসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি।
হামলায় সাংবাদিক নিহতের ঘটনাকে ‘অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক’ বলে পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজার হাসপাতাল থেকে ‘সরাসরি সম্প্রচার’ চলাকালে ওই হামলায় বিশ্বনেতাদের চাপের মুখে পড়ে তার সরকার।
এরপরেও গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় গাজা নগরীতে প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে অন্তত ১২ জন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হন।