ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) গত আসরে তোলপাড় শুরু হয়েছিল একটি বিতর্কিত, চোখে লাগার মতো স্টাম্পিংয়ে। গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে ছিল শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। তখনই শাইনপুকুরে ব্যাটার মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির যেভাবে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।
সরাসরি সম্প্রচারিত সেই ম্যাচের ফুটেজে দেখা যায়, উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর উইকেটকিপার স্টাম্প ভেঙে দেয়ার আগে পপিং ক্রিজের লাইনে ব্যাট ঢুকিয়েও বের করে নেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এমনভাবে ব্যাটটা প্লেস করেছিলেন তিনি, খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিল স্বেচ্ছায় আউট হয়েছেন তিনি! তার সেই ডিসমিসালের পর ম্যাচটাও হেরে বসে শাইনপুকুর।
এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (এসিইউ) বিশদ তদন্ত শুরু করে। কয়েক মাসের তদন্ত শেষে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সাব্বিরের সম্পৃক্ততা পেয়েছে এসিইউ। বিসিবির এসিইউ সূত্রে জানা গেছে, সেই বিতর্কিত স্টাম্পিং কান্ডে সাব্বিরকে পাঁচ বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে এসিইউ। যদিও এখন পর্যন্ত বিসিবির তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষনা আসেনি এই বিষয়ে।
সাব্বিরের সেই স্টাম্পিংয়ে আউট হওয়ার পর বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। সরব ছিলেন বিসিবির কর্মকর্তা, ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরাও। তদন্তের স্বার্থে বিসিবির একাডেমি মাঠে গত ১০ এপ্রিল সাব্বিরের সাথে ডাক পড়ে গুলশানের উইকেটকিপার আলিফ হাসানেরও। বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের প্রধান রাইয়ান আজাদের সামনে তখন সেই ডিসমিসালের পুনর্মঞ্চায়ন করে দেখান দুজন। নেয়া হয় ভিডিও ফুটেজও। অর্থাৎ ম্যাচে যেভাবে আউট হয়েছিলেন, ঠিক সেটাই বেশ কয়েকবার করে দেখান সাব্বির।
‘অস্বাভাবিক’ সেই আউটের পর বিসিবি থেকেও বলা হয়েছিল, ক্রিকেটের নৈতিক মান ধরে রাখতে দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির পথে রয়েছে বোর্ড। সেই ধারাবাহিকতায় এসিইউর তদন্তে উঠে এসেছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সাব্বিরের কথা। এসিইউর পাওয়া নথি অনুযায়ী মূলত তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে সাব্বিরের বিপক্ষে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের চেষ্টা, সন্দেহভাজন বুকির সাথে যোগাযোগ ও রিপোর্ট না করা এবং তদন্তে অসহযোগিতা।