‘গাজা দখল’ অভিযানে অটল থাকার ঘোষণা ইসরায়েলের

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজা। ছবি: এপি/ ইউএনবি

গাজা শহরের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে শনিবার রাতভর ইসরায়েলি হামলায় বহু ভবন ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয়রা।

রয়টার্স স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জেইতুন ও শেজাইয়া এলাকায় টানা বিস্ফোরণ হয়। সাবরায় ট্যাংকের গোলায় ঘরবাড়ি ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং উত্তর জাবালিয়ায় কয়েকটি ভবন উড়িয়ে দেওয়া হয়। আতঙ্কে অনেকে শহর ছাড়তে শুরু করলেও অনেকেই মরলেও ঘর না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা আবারও জাবালিয়ায় প্রবেশ করেছে ‘সুড়ঙ্গ ধ্বংস ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা’ করতে।

তাদের দাবি, এ অভিযান হামাসকে পুনর্গঠিত হতে দেবে না। এ মাসে ইসরায়েল গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। কয়েক সপ্তাহ পর আনুষ্ঠানিক অভিযান শুরু হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ ঘোষণা দিয়েছেন, দুর্ভিক্ষ সত্ত্বেও অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হামাস যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে এবং সব জিম্মি মুক্ত না করলে গাজা শহর ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে হামাস বলেছে, ইসরায়েলের এ পরিকল্পনা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় তাদের অনাগ্রহ প্রমাণ করছে। তাদের দাবি, কেবল যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমেই জিম্মি ফেরত দেওয়া সম্ভব এবং তাদের জীবনের দায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর।

প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় রয়েছে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, গাজায় আটক ১০ জীবিত জিম্মি ও ১৮ মৃতদেহ ফেরত, বিনিময়ে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি।

তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের শর্তেই যুদ্ধ শেষ ও জিম্মি মুক্তির আলোচনা সম্ভব।

ক্ষুধা ও আতঙ্কে গাজাবাসী

প্রায় ২০ লাখ মানুষের অর্ধেক এখন গাজা শহরে। বহু পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালালেও অনেকে আর্থিক সংকটে রয়ে গেছেন। স্থানীয় আয়াহ (৩১) বলেন, ‘আমাদের কোনো আশ্রয় নেই, অর্থ নেই। আমরা ক্ষুধার্ত, আতঙ্কে আছি।’

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজা শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তবে ইসরায়েল এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলছে, জুলাই থেকে তারা সহায়তা বাড়িয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপুষ্টি ও অনাহারে আরও আটজন মারা গেছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্যসংকটে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৯ জনে, যাদের মধ্যে ১১৫ শিশু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপর ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৬২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, নিহতদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *