আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন ধরনের দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর ‘উন্নত যুদ্ধ ক্ষমতা’ রয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করলেও দেশটির সামরিক বাহিনীর বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, এগুলো ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে অত্যন্ত কার্যকর।
এর আগে গত জানুয়ারিতে একটি ‘হাইপারসনিক ওয়ারহেড’ যুক্ত নতুন প্রযুক্তির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার দাবি করে পিয়ংইয়ং। সে সময় বলা হয়, ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ন্ত্রণে রাখবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।’
কিম জং উন এমন সময়ে নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চলালেন, যখন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নতুন করে উত্তেজনায় জড়িয়েছে তার দেশের সেনারা।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের দাবি, উত্তর কোরিয়া রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা পাচ্ছে। বিনিময়ে তারা ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করতে সেনা পাঠাচ্ছে।
সম্প্রতি দেশটি আরও দাবি করে, উত্তর কোরিয়ার কিছু সেনা দুই দেশের মধ্যে অবস্থিত বেসামরিক অঞ্চল (ডিএমজেড) অতিক্রম করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানায় অবৈধ প্রবেশ। ওই সেনাদের রুখতে সতর্কতামূলক গুলিও চালায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
দুই দেশের ডিএমজেড এরইমধ্যে উত্তর কোরিয়ার ৩০ জন সেনা বাহিনীর একটি দল অতিক্রম করেছে বলে জাতিসংঘের কমান্ড নিশ্চিত করেছে।
এই ঘটনার পর ক্ষোভ ও নিন্দা জানায় সিওল। সিওল একে পিয়ংইয়ং-এর ‘উদ্দেশ্যমূলক উস্কানি’ বলে অভিযোগ করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় পরিসরের যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া।

এই মহড়াকে উত্তর কোরিয়ার জন্য হুমকি ও উসকানি হিসেবে দেখছেন কিম জং উন। তিনি বলেন, ‘সিওল-ওয়াশিংটন যৌথ মহড়া পিয়ংইয়ং-এর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।’
উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌমত্বে আঁচ এলে পিয়ংইয়ংও কঠোর জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন কিম জং উন। সেইসঙ্গে দ্রুতই দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই নেতা।
কিম জং উনের হুঁশিয়ারির মধ্যেই আগামী সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করতে যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং।
লি তার নির্বাচনী প্রচারে দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং সেই প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন-সিওল সম্পর্কে কড়া নজরদারি রাখছে পিয়ংইয়ং।