সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ শুরু করল বাংলাদেশ। স্বাগতিক ভুটানকে নিজেদের মাঠেই ৩–১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে লাল–সবুজের মেয়েরা। দলের হয়ে একটি গোল করেন সুরভী আকন্দ প্রীতি, অন্যদিকে আলপী আক্তার করেন জোড়া গোল।
ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশ মাঠে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোলের দেখা মিলছিল না। প্রথমার্ধের প্রায় শেষ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকে খেলা। ঠিক তখনই আসে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। মাঝমাঠ থেকে গড়ে ওঠা অ্য্যাটাক, ভুটানের গোলরক্ষক এগিয়ে এসেছিলেন বল ঠেকাতে। ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষকের মাঝে তৈরি হওয়া ফাঁকা জায়গা থেকে বলটি প্রীতির গায়ে লেগে সরাসরি জালে প্রবেশ করে। শেষ মুহূর্তের সে গোলে বিরতিতে ১–০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে অতিথি দল। ৫৩ মিনিটে দেখা মেলে দ্বিতীয় গোলের। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে আলপী আক্তার ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে বল পাঠান ভুটানের জালে। বাংলাদেশ তখন ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই ভুটান একটি গোল শোধ করে ম্যাচে খানিকটা প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনে। তবে সে উত্তেজনা স্থায়ী হয়নি বেশি সময়।
৬৪ মিনিটে কর্নার থেকে তৈরি হওয়া জটলার মাঝে বল ঠেলে দেন আলপী আক্তার। তার দ্বিতীয় গোলেই বাংলাদেশের লিড হয়ে যায় ৩–১। শেষ দিকে আরও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। ভুটানের ডিফেন্ডাররা বেশ কিছু নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন। তবুও শেষ পর্যন্ত ব্যবধান কমানো সম্ভব হয়নি স্বাগতিকদের।
ম্যাচ শেষে কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু বলেন, ‘শুকরিয়া আল্লাহর কাছে যে আমরা প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়ে শুরু করতে পেরেছি। শুরুর দিকে আমাদের কিছু ভুল ছিল, সেগুলো আমরা খুঁজে বের করেছি। এগুলো নিয়ে পরের সেশনে কাজ করব। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোনোর পরিকল্পনাই আমাদের। প্রথম ম্যাচ হওয়ায় মেয়েদের জন্য মানিয়ে নেওয়া কিছুটা কঠিন ছিল, কিন্তু তারা ভালো খেলেছে। দুই ফরোয়ার্ড প্রীতি আর আলপী দারুণ খেলেছে, অনেক সুযোগও তৈরি করেছে। তবে ভুলগুলো শুধরে নিতে পারলে আমরা আরও ভালো করতে পারব।’
বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবল এখন যেন একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠছে। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা মেয়েদের ফুটবলে নতুন আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে। ছোট বয়স থেকেই আন্তর্জাতিক আসরে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে মেয়েরা, যা সামনে আরও বড় অর্জনের পথ খুলে দিতে পারে। আর প্রথম ম্যাচের জয়টি তাদের সেই আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিল নিঃসন্দেহে।