জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একসঙ্গে ৪১ অতিরিক্ত কর কমিশনারকে বদলি করে তাদের অবিলম্বে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে।
এনবিআরের কর প্রশাসন থেকে এই বদলির আদেশ মঙ্গলবার পাঠানো হয়। একসঙ্গে এত বড় সংখ্যায় কর্মকর্তার বদলি করার ঘটনা নজিরবিহীন; তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, এর ফলে এনবিআরের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা এবং কার্যক্রমে পরিবর্তন আসবে।
কর কর্মকর্তাদের মতে, গত মে ও জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকার বিসিএস (কর) একাডেমির পরিচালক হাফিজ আল আসাদ, ঢাকার কর অঞ্চল–২০ এর পরিদর্শী রেঞ্জ–১ এর শেখ শামীম বুলবুল, নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চল এর ছায়িদুজ্জামান ভুঞা, গাজীপুর কর অঞ্চল এর বেগম হাসিনা আক্তার খানসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা রয়েছেন। অন্যান্য বদলি কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন, মিজানুর রহমান, মো. নাসেরুজ্জামান, আশরাফুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, মো. মঈনুল হাসান এবং ইভানা আফরোজ সাঈদ।
এছাড়া এনবিআর সদস্য একে এম বদিউল আলম, লুৎফুল আজিমসহ ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, এসব কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব দাখিলের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের সময় সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়। দেড় মাসের অনুসন্ধানে দুদক এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, এনবিআর কর্তৃপক্ষ সোমবার ৯ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। এসব কর্মকর্তার মধ্যে অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা, সুলতানা হাবীব এবং সিআইসির পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরানীসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই বদলি এবং বরখাস্তের মাধ্যমে এনবিআরের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে সংস্থার অভ্যন্তরীণ সংস্কারের পদক্ষেপগুলোকে আরো জোরদার করা হবে।