রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পার্কিংয়ের একটি গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা দুই মরদেহের পরিচয় ও তাদের সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
নিহত জাকির হোসেন (২৬) ছিলেন গাড়িটির চালক এবং নিহত মিজান (৩৮) ছিলেন চালকের সহকারী। এদের দুজনেরই বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায়।
এর মধ্যে জাকির খিলপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং মিজান দুই নম্বর রামনারায়নপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
গাড়িটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ সৌরভের বাড়িও নোয়াখালীতে। তিনি বলেন, ‘রোববার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫ টায় ড্রাইভার জাকির আর আমি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মৌচাক যাই। আমি একটা ব্যক্তিগত কাজেই বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে মৌচাক যাওয়ার পর জাকির আমাকে জানায় সে নোয়াখালীর একটি ভাড়া পেয়েছে তিন হাজার টাকা। ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল থেকে যাত্রী গাড়িতে উঠবে।’

‘বেলা ১১ টায় সেখান থেকে রোগী রিলিজ হলে তারা নোয়াখালী যাবে। সে আমাকে কাজ শেষে নোয়াখালী চলে যেতে বলে। তার সঙ্গে যেহেতু মিজান নামে একজন ছিল তাই আমি কাজ শেষে বাসে করে নোয়াখালী চলে আসি। তারা আমাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের সামনেই নামিয়ে দিয়েছিল,’ যোগ করেন তিনি।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জাকিরের মোবাইলে টেলিফোন করলে কলটি কেটে দেওয়া হয় বলে জানান সৌরভ। তিনি বলেন, ‘সে ব্যস্ত ভেবে আর পরে কল দিইনি। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে জিপিএস ট্র্যাকারে আমার গাড়ির লোকেশন একই জায়গায় দেখে তাকে আবারও কল দিই। কিন্তু তখন আর ফোন যায়নি। মিজানের নম্বরটি বন্ধ পাচ্ছিলাম।’
পরে দুপুর ২টার দিকে রমনা থানা থেকে পুলিশ তাকে ফোন করলে দ্রুত ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন বলে জানান সৌরভ। তিনি জানান, গত তিন মাস থেকে তার একটি প্রাইভেট কারের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করছিলেন জাকির হোসেন।

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘এক্সপার্ট অপিনিয়ন ছাড়া নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাবে না। প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা খুবই কম বলে মনে হচ্ছে। তারপরও আমরা এটাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। সব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করে যাচ্ছি। সবকিছু তদন্ত এবং বিশ্লেষণ করে দেখছি।’
ডিসি মাসুদ বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে গাড়িটি সেখানে পার্ক করা হয়। বেজমেন্টে বাতাস কম থাকে, উত্তাপও থাকে বেশি। প্রচণ্ড গরমের কারণে মরদেহ পচে গেছে।’