জুলাই সনদকে ভবিষ্যৎ সরকারের ‘সংস্কারকৃত সংবিধানে’ নয়, বরং ‘নতুন সংবিধানে’ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আখতার হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যে নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটেছে তাদের অভিপ্রায়কে ধারণ করতে একটি “নতুন সংবিধান” আমাদের জন্য সমাধান। আমরা সেই “নতুন সংবিধানে” প্রস্তাবনার মধ্যেই জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাই।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘কিছু বিষয় তা যদি জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকতো তাহলে এই ঘোষণাপত্র আরো পরিপূর্ণ হতো। ১৯৪৭ সালকে এখানে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের এই ভূখণ্ডের এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ার পেছনে ’৪৭, ’৭১ এবং আমাদের ’২৪-এর আন্দোলনের অবদান রয়েছে, সবকিছুর একটি সম্মেলন এই ঘোষণাপত্রকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদের সংখ্যার ব্যাপারে প্রায় এক হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। সরকার যে শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়েছে, তার একটা ছাপ আমরা এই ঘোষণাপত্রে দেখতে পেলাম।’
‘গত ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যা, ভ্যাট ও কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার হত্যার প্রতিবাদ, আগ্রাসন ও মোদি বিরোধী আন্দোলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর উল্লেখ থাকলে জুলাই ঘোষণাপত্রটি আরও পরিপূর্ণ হতো,’ যোগ করেন তিনি।
আখতার বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করতে চাই, জুলাই সনদে যে সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার থেকেই এর “লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার” জারি করে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এই সনদের ভিত্তিতেই পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে, যা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে, আমাদের আপত্তি নেই। তবে তার আগে সরকারকে অবশ্যই গণহত্যার বিচার, সংস্কার বাস্তবায়ন, মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড” নিশ্চিত করতে হবে।’