ন্যায়বিচার হবে রাষ্ট্রের নতুন যাত্রার প্রথম লক্ষণ: সাকি

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
মিরপুর ১০ আইডিয়াল গার্লস স্কুলের পাশে সমাবেশ, মোমবাতি প্রজ্বলন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও স্মৃতিচারণের আয়োজনে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ছবি: টাইমস

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বারবার শহীদের কথা বলি। কারণ, পুরনো বন্দোবস্ত জায়গা করে নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ন্যায়বিচার হবে আমাদের এই রাষ্ট্রের নতুন যাত্রার প্রথম লক্ষণ।’

শহীদ জুলফিকার আহমেদ শাকিলসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার ঢাকার মিরপুর ১০ আইডিয়াল গার্লস স্কুলের পাশে সমাবেশ, মোমবাতি প্রজ্বলন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও স্মৃতিচারণের আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘কথা ছিল, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। কিন্তু শহীদ পরিবারগুলো হাহাকার করে বিচার প্রক্রিয়া কত দূর ভেবে। একটা রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্র হয়ে উঠছে কি না, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারছে কি না তা নির্ভর করে রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার দেওয়ার সক্ষমতা ওপর।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শহীদ এবং যারা আহত তারা এই জাতিকে গৌরবান্বিত করেছেন। তারা প্রমাণ করেছেন, আমাদের দেশের মানুষ মৃত নয়, তারা অন্যায়ের বিরোধিতা করে ও শেষপর্যন্ত লড়াই করে খুনীদেরকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করে গেছেন।’

যখন মিরপুর ১০ দখল হয়ে গিয়েছিল, তখন অন্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে শহীদ শাকিলরা জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই প্রতিরোধ সমরে খালি হাতে লড়াই সংগঠিত করেছিলেন তারা। আওয়ামী পুলিশ ও গুণ্ডাবাহিনী সশস্ত্র এক সঙ্গে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেখানে, যোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, এই দিনেই গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে তিন দিন কোমায় থাকার পর শহীদ শাকিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবান্বিত কাজটি শহীদ জুলফিকার শাকিল করে গিয়েছেন। ছাত্র ফেডারেশন যত দিন টিকে থাকবে তত দিন এই সংগঠনকে শহীদ শাকিল যুগে যুগে গৌরবান্বিত করে যাবেন। শহীদ শাকিলের চৈতন্য, সততা, দেশপ্রেম ও এই দেশের মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে ধারণ করার অঙ্গীকারকে ধারণ করা ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিটি নেতা, কর্মী, সদস্যের দায়িত্ব।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, সবার আগে কর্তব্য ছিল শহীদদেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের পর সবচেয়ে বড় মাহেন্দ্রক্ষণ ৫ আগস্ট আবার আসছে।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের নেতা ইয়াসিন খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলীফ দেওয়ান ও সৈকত মল্লিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য হাসান আশরাফ, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহীম চৌধুরী; বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় স্কুল বিষয়ক সম্পাদক হাসান আল মেহেদী, সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইরান ও আশরাফুল আলম সোহেল, ঢাকা মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাঁকন বিশ্বাস; বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, মিরপুরের সংগঠক রতন তালুকদার; বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আবু রায়হান খান। কেন্দ্রীয় সংগঠক সাইফুল্লাহ সিদ্দিক রুমন, মিরপুর থানার যুগ্ম আহ্বায়ক রতন তালুকদার, রুপনগর থানার সংগঠক লুৎফরনাহার সুমনা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা, অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মাহবুব রতন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *