বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ও ঐকমত্যভিত্তিতে জুলাই সনদ ঘোষণার পর দেশে ফিরবেন বলে দলটির নেতারা আশা করছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস শিগগিরই এ দুটি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবেন বলেও বিএনপির পক্ষ থেকে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং ওই ভাষণেই নির্বাচনী রোডম্যাপের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। এর আগেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দলের শীর্ষ নেতারা জানান, রোডম্যাপ এবং জুলাই সনদ ঘোষণার পরই তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন-তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক ইতিমধ্যে দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন এবং মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কেন্দ্র করে দল সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এখনো নির্দিষ্ট কোনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। দলের উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির ও মাহদী আমিন জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন।
রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার উচিত নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্ট নির্বাচনের তারিখ জানানো।
তিনি বলেন, ‘যদি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভোট হয়, তা হলে এখনই নির্বাচন কমিশনকে তা জানানো প্রয়োজন; যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি জানিয়েছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে সরকারের কোনো বাধা বা আপত্তি নেই। তবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হলে বিএনপি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে।
তারেক রহমান ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাড়ি জমান এবং প্রায় ১৭ বছর ধরে নির্বাসনে আছেন। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়ার কারাবাসের পর তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি সকল মামলায় খালাস পেয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনী রোডম্যাপ ও জুলাই সনদ রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির জন্য নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারেক রহমান নিজেই নেবেন।