২৪ জুলাই বন্ধ থাকার পর আন্তঃজেলা বাস ও লঞ্চ চলাচল আংশিকভাবে চালু ছিল। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করা হয় এ দিন।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর তিন সমন্বয়কারীকে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর পাওয়া যায়। আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার এবং রিফাত রশিদকে ১৯ জুলাই অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তুলে নিয়েছিল। আসিফ এবং বাকের দুজনেই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন যে, পাঁচ দিন তাদের চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় আসিফ মাহমুদকে এবং ধানমন্ডি এলাকায় আবু বকরকে চোখ বেঁধে ছেড়ে দেয়া হয়।
সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে আরও প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৩ জুলাই রাত থেকে ২৪ বুধবার দুপুর পর্যন্ত সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয় ৬৪১ জনকে।
এ নিয়ে ৮ দিনে (১৭-২৪ জুলাই) সারা দেশে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে চার হাজার। বিভিন্ন মহানগর, জেলা ও থানা–পুলিশ সূত্রে গ্রেপ্তারের এ তথ্য জানা যায়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এই গ্রেপ্তার অভিযান চলমান ছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অনেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী। কোথাও কোথাও পুরোনো মামলায়ও গ্রেপ্তার করা হয়।
২৩ জুলাই বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন ১ জুলাই থেকে। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারা দেশে। এর পরদিন থেকে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনায় মামলা হয়।
রাজধানীর চারপাশেও গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্র জানায়, সাভারে ২৩ জুলাই নতুন করে ৪টি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে সাভারে মোট ৭টি মামলা হয়েছে। সাভারে গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন।
নারায়ণগঞ্জে নাশকতা ও সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এদিন ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গাজীপুর মহানগরে ৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া মানিকগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৮ জন, ফরিদপুরে ১ জন, রাজবাড়ীতে ২ জন ও মাদারীপুরে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।