৬ দাবিতে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, বিভ্রান্তিতে যাত্রীরা

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
সিলেট কদমতলি বাসস্ট্যান্ড থেকে কোন বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

সিলেটে ৬ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতি মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটের সব বাস চলাচল।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস মালিক সমিতি এবং সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়।

গত রোববার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সিলেটের পরিবহন অঙ্গনে তৈরি হয়েছে দ্বিধাবিভক্ত অবস্থা। শ্রমিক নেতাদের একটি পক্ষ ধর্মঘটের পক্ষে থাকলেও, অন্য পক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম বিভ্রান্তি।

মঙ্গলবার সকালে সিলেটের কদমতলি বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, কোন বাস ছেড়ে যায়নি। যাত্রীদের উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলকভাবে কম। বাস না পেয়ে অনেককেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে। তবে নগরীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সকল ধরনের যান চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে, যে কারণে নগরীর মধ্যে ধর্মঘটের প্রভাব তেমনটা পড়েনি। আজ সকাল থেকে জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, টিলাগড় ও মদিনা মার্কেট এলাকায় স্বাভাবিকভাবে ছোট ছোট স্থানীয় যান চলাচল করতে দেখা গেছে।

তবে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে আজ যানবাহন সংখ্যায় অনেক কম। এতে করে বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। কিছু কিছু পয়েন্টে যানবাহনের অপেক্ষায় অনেককে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানকারীরা যে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, সেগুলো হল: (০১) সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৬ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতা বলে বাস ও মিনিবাসের জন্য ২০ বছর, ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানের জন্য ১৫ বছর, সিএনজি, ইজিবাইক ও লেগুনার জন্য ১৫ বছরের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ নির্ধারণ সংক্রান্ত সরকার প্রজ্ঞাপন বাতিল। (০২) সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল ও কোয়ারি পুনরায় চালুর অনুমতি। (০৩) বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সনদ প্রদানে বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল এবং গণপরিবহনের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রত্যাহার। (০৪) সিলেট অঞ্চলের সব ক্রাশার মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বন্ধ, বিদ্যুতের মিটার ফেরত দেওয়া এবং যেসব মেশিন ভাঙচুর করা হয়েছে, সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া। (০৫) গাড়ি থেকে জব্দ করা পাথর ও বালুর ক্ষতিপূরণ প্রদান। (০৬) সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার এবং বালু-পাথরবাহী পণ্য পরিবহন চালকদের হয়রানি না করা।

এই ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ বাড়ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। তবে ধর্মঘট আহ্বানকারীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *