ক্রিকেটকে কেবল ঢাকাকেন্দ্রিক না রেখে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যার নেতৃত্বে আছেন নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ক্রিকেটের বিকাশ, তৃণমূল পর্যায়ের ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে নিজের টিম নিয়ে বুলবুল গত এক সপ্তাহ ছুটে বেরিয়েছেন রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুরের মতো বিভাগীয় শহরে। সোমবার বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের তৃতীয় সভার পর সভাপতি জানান, ক্রিকেট বিকেন্দ্রীকরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে মিনি বিসিবি চালুর কথা।
বোর্ড পরিচালকদের সাথে প্রায় ছয় ঘণ্টার বৈঠকের পর রার ৯টা ১৫ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিসিবি সভাপতি। ক্রিকেট বিকেন্দ্রীকরণ উদ্যোগের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণের যে উদ্যোগটা আমরা নিয়েছি, সেটার প্রায় ২০% করে ফেলেছি। এখানে স্টেকহোল্ডার যারা আছেন, তারা সকলেই রাজি আছেন। সেই অনুযায়ী আমরা এগোচ্ছি।’
এই উদ্যোগে বিসিবি সভাপতির লক্ষ্য দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করে দেয়া, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে অনেক প্রতিভা ছড়িয়ে আছে। কিন্তু একটা উপজেলার ছেলে যদি খেলারই সুযোগ না পায়, তাহলে তার মেধাটা কীভাবে বিকশিত হবে। একটা জেলায় যদি ভালো কোনো কোচই থাকে না থাকে, তাহলে কীভাবে খেলোয়াড় তুলে নিয়ে আসবে।’
‘তাই ক্রিকেটারদের মেধা যাচাইয়ের জন্য খেলা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করব অনূর্ধ্ব-১৯।, অনূর্ধ্ব-১৮ দলের জন্য দুই দিনের ম্যাচের আয়োজন করব। একটা পঞ্চাশ ওভারের আলাদা ইভেন্ট করব। এসব কাজ করার জন্যই আমরা সব জায়গায় গিয়েছি এবং একটা পজিটিভ রেজাল্ট পেয়েছি।’, আরও বলেন বুলবুল।
এর জন্য প্রতিটি জেলায় স্থানীয় লিগ চালু করার প্রাথমিক ধাপ বিসিবি পেরিয়ে গেছে জানিয়ে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল বলেন, ‘জেলা লিগ চালু করাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে আমরা কথা বলছি। ছোট্ট বিসিবি যে নিয়ে যাব, তারা এগুলো দেখভাল করবে। আমাদের পরিকল্পনায় বিভিন্ন রিজিওনে হেড অফ ক্রিকেট বলে একটা রোল থাকবে, তিনি সব পরিচালনা করবেন। তার আন্ডারে যেসব জেলা থাকবে সেসব জেলার কোচরা কাজ করবেন। তার আন্ডারে একটা করে কর্মাশিয়াল টিম, মিডিয়া টিম, ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট দল থাকবে।’
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ক্রিকেটের দেখভাল করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে মিনি বিসিবি চালুর পরিকল্পনা আছে বুলবুলের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের। মিনি বিসিবির অধীনেই জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কোচরা কাজ করবেন। অবশ্য এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সেই ক্রিকেট কাঠামো বিসিবি থেকে সরাসরি কোনো অনুদান পাবে না বলে জানিয়েছেন বুলবুল। তবে মিনি বিসিবির জন্য আলাদা একটি অর্থনৈতিক মডেল চালু করা হবে।
এই প্রসঙ্গে বুলবল স্বচ্ছ একটা ধারণা দেন সংবাদ সম্মেলনে, ‘মিনি বিসিবি কীভাবে কাজ করবে, সেটার জন্য একটা ফান্ডিং মডেল আমরা চালু করব। যেখানে বিসিবি থেকে সরাসরি তারা টাকা পাবে না। টাকা পয়সা তার অর্জন করবে ক্রিকেটার কোচ বা বিভিন্ন কাজ দিয়ে। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, কোনো রিজিওনে হয়তো পাঁচ হাজার ক্রিকেটার গ্যাদার করল। তখন তারা বিসিবি থেকে একটা অনুদান পাবে। যদি কেউ বিসিবির সাপোর্ট ছাড়া তারা যদি একটা ফান্ডিং আনতে পারে, তাহলে বিসিবি থেকে তারা ডাবল টাকা পাবে। সবকিছুর জন্য মুখাপেক্ষী থাকবে সেই এলাকার ডিরেক্টর। কিন্তু পুরো ব্যাপারটা চালিয়ে রাখবে মিনি বিসিবি।’