পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের সুপারিশ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি। রয়টার্স জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান তিনি।
আনা কেলি বলেন, ‘গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত এড়াতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ কারণেই জেনারেল আসিম মুনির তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের সুপারিশ করেছেন।’
তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে জেনারেল মুনিরকে স্বাগত জানান এবং পারমাণবিক উত্তেজনা প্রশমনে তার ‘সংযত ভূমিকার’ জন্য ধন্যবাদ জানান।
পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক ডন লিখেছে, ‘আসিম মুনিরই প্রথম বর্তমান সেনাপ্রধান যিনি কোনো নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে মিলিত হলেন। অতীতে শুধুমাত্র সামরিক শাসনের সময় অথবা রাজনৈতিক পদে থেকে সেনাপ্রধানদের এ ধরনের মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।’
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জেনারেল মুনিরের সঙ্গে একমত। আমি তাকে এখানে ডেকেছিলাম, কারণ আমি তার ভূমিকার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছি- তিনি সংঘাতের পথ পরিহার করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি কয়েকদিন আগেই হোয়াইট হাউসে এসেছিলেন। আমি একটা যুদ্ধ থামিয়েছি, আমি পাকিস্তানকে ভালোবাসি। আমি মনে করি মোদি একজন অসাধারণ মানুষ। গত রাতে তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমরা একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- আমি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে পেরেছি।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পারমাণবিক উত্তেজনার সময় হোয়াইট হাউসের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সংঘাত প্রশমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ ছিল, যা ট্রাম্প প্রশাসনের একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, নোবেল শান্তি পুরস্কার সাধারণত চারটি মূল ক্ষেত্র বিবেচনা করে প্রদান করা হয়। সেগুলো হলো: অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ, শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষা এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিত বিশ্ব গঠনে ভূমিকা রাখা।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভূমিকাকে এই মানদণ্ডগুলোর সঙ্গে তুলনা করেই মনোনয়নের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বলে জানিয়েছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।