৬ ফুট উচ্চতার নাঈম হাসান করেন অফ স্পিন। দৈহিক গড়নের জন্য আর দশজন স্পিনারের চেয়ে বাউন্সটা একটু বেশিই পান। সেটাও এখনকার দিনে বাড়তি একটা সুবিধা। ২০১৮ সালে অভিষেকের পর সাত বছরে খেলেছেন মাত্র ১৩ টেস্ট। কখনো ইনজুরি, কখনো টিম কম্বিনেশনের জন্য জায়গা হয়নি দলে। তবুও নিজেকে ‘আনলাকি’ ভাবতে নারাজ এই তরুণ বোলার।
দেশের বাইরে এবারই প্রথম টেস্ট ম্যাচে বল করেছেন নাঈম। এর আগে ২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেন্স টেস্টে ভারতের বিপক্ষে একাদশে থাকলেও মাথায় আঘাত পেয়ে বল করতে পারেননি। এবার গলে শ্রীলংকার বিপক্ষে গল টেস্টে বল করে প্রথমবার দেশের বাইরে নিলেন পাঁচ উইকেট।
চতুর্থ দিন কামিন্দু মেন্ডিস-মিলান রথনায়েকের জুটিতে লংকানদের লিড নেয়া যেখানে কেবলই সময়ের ব্যাপার ছিল, তখনই স্পিন জাদু নিয়ে হাজির হন নাঈম। লাঞ্চ ব্রেকের পর শেষ চার উইকেটের তিনটিই নেন এই অফস্পিনার। এর আগে দিনের শুরুতে একটি ও তৃতীয় দিন নেন প্রথম উইকেট। ইনিংস শেষে নাঈমের বোলিং ফিগার ৪৩.২-৪-১২১-৫।
বল হাতে এমন পারফরম্যান্সের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন নাঈম। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে জানালেন, অনিয়মিত সুযোগ পেলেও নিজেকে আনলাকি বা দুর্ভাগা ভাবেন না তিনি। বরং মেনে নিয়েছেন বাস্তবতা, ‘আসলে আনলাকি বলতে কিছু নাই। যা আল্লাহ রিজিকে রাখসে, তাই হবে। আপনি দেখেন সবার ক্যারিয়ার তো আর এক রকম হয় না। স্পোর্টস ম্যানদের একেকজনের একেক রকম হয়। আমারটা যেমন হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।’
প্রথম তিন দিন বোলারদের জন্য গলের উইকেটে কিছু না থাকলেও চতুর্থ দিন থেকে স্পিনাররা বেশ সহায়তা পেয়েছেন। দ্বিতীয় সেশনের শুরু থেকেই বাড়তি বাউন্স আর টার্ন পেতে থাকেন নাঈম। সেশনের শেষদিকে দুই লংকান স্পিনার প্রবাথ জয়সূরিয়া, থারিন্দু রথনায়েকেও বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তবে খুব বেশি সফলতা পাননি কেউই। যেখানে বল হাতে দিনের নায়ক নাঈম।
পাঁচ উইকেট নেয়া স্পেলের পর নাঈম জানান নিজের বোলিং নিয়ে পরিকল্পনার কথা। ২৫ বছর বয়সী এই স্পিনার বলেন, ‘আসলে আমি একটা জিনিসই চেষ্টা করেছি, একটা জায়গায় বল করা, পেস ভেরিয়েশন ধরে রাখা। সিমের পজিশন চেঞ্জ করে দেখলাম কোনটা ভালো হচ্ছে। আমি একেকজন ব্যাটারকে একেক লাইনে বল করেছি।’
গল টেস্টে চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৭ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ১৭৭ রান তুলেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। শ্রীলংকার এক ইনিংস এখনো বাকি। জয়, পরাজয় কিংবা ড্র; তিন ফলাফলের যেকোনো কিছুই হতে পারে গল টেস্টে।